বানিয়াচং প্রতিনিধি

২৯ এপ্রিল, ২০২৪ ১৩:০৩

বানিয়াচংয়ের সাগরদীঘিকে দখলমুক্ত করতে আবেদন

বানিয়াচংয়ের ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত ভাটি বাংলার পর্যটনখ্যাত ঐতিহাসিক সাগরদীঘি থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন বানিয়াচং সাগরদীঘি ভূমিহীন সমবায় সমিতি ও সাগরদীঘির চারপাড়ের জনগণের পক্ষে সাগরদীঘির পূর্বপাড়ের নজরুল ইসলাম খানের পুত্র আশিকুর রহমান খান।

গত রোববার (২১ এপ্রিল) এই আবেদন করেন তিনি। পরবর্তীতে বিষয়টি রাজস্ব শাখাকে আবেদন যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক জিলুফা সুলতানা।

আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে সাগরদীঘির উত্তরপাড়ের মৃত অমরুত উল্লাহর পুত্র মো. জাহাঙ্গীর আলম, সাগরদীঘির পশ্চিমপাড়ের মৃত মন্নর উল্লাহর পুত্র বাবুল মিয়া, সাগরদীঘি পূর্বপাড়ের আজমান উল্লাহর পুত্র তাজুল ইসলাম ও ২নং ইউনিয়নের মিনাট মহল্লার মৎস্যজীবী মুকিত মিয়াকে।

আবেদন সূত্রে জানা যায়, বানিয়াচংয়ের সাগরদীঘি বিগত ১৯৮৭ সালে সরকার কর্তৃক খননের পর হতে উল্লিখিত বিবাদীগণ জোর জবরদস্তি ও একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার ও সিন্ডিকেট গঠন করে চারপাড়ের মানুষের উপর জুলুম নির্যাতন করে আসছে। তাদের ভয়ে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না। এই কর্মকাণ্ডে চারপাড়ের মানুষ দীর্ঘ ২৩ বছর যাবত ভীতির মধ্যে জীবনযাপন করছে।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০০২ সাল হতে তাদের মনগড়া কমিটি করে বিবাদীগণ গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি হিসাব অনুযায়ী আনুমানিক ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এখন পর্যন্ত তারা সঠিক কোন হিসাব দিতে পারেননি। বিবাদীগণ চলতি বছরের উৎপাদিত মাছ প্রতিরাতে ৬০ হাজার টাকায় রাতের আঁধারে বিক্রি করে আসছেন বলে অভিযোগ। তারা সাগরদীঘি চারপাড় কেটে সরকার কর্তৃক নির্মিত সুইচ গেইটের পানি ছেড়ে দিয়ে পানি চাহিদা পূরণ না করে পরিবেশের দূষণ সৃষ্টি করছেন। যার ফলে পর্যটনখ্যাত এই সাগরদীঘির নৈসর্গিক সৌন্দর্যের মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে।

সাগরদীঘির চারপাড়ে অবস্থিত খাস ভূমিতে বিবাদীগণ ২ লাখ টাকা করে নিয়ে মানুষকে গৃহনির্মাণের সুবিধা করে দিচ্ছে জাহাঙ্গীরগং। প্রতি বছর শুধু রাতের বেলায় চোরাইভাবে প্রায় ১ কোটি টাকার মাছ বিক্রি করে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

সাগরদীঘির মতো বিশাল জলমহালের এবং ঐতিহ্যবাহী পর্যটন স্থানে বিবাদীগণ বেআইনিভাবে জোরপূর্বক রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ না করতে পারে এবং এর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন সাগরদীঘি চারপাড়ের জনগণের পক্ষে আশিকুর রহমান।

এদিকে আবেদনের কপি জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।

এ-ব্যাপারে কথা বলতে বিবাদীদের সঙ্গে কথা বলতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) প্রিয়াঙ্কা পাল জানান, লিখিত আবেদন পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত