সিলেটটুডে ডেস্ক

১১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১৯:২৯

করোনায় মৃত্যু কমাবে নিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস

অনেক মানুষ তাদের কভিড-১৯-এর কারণে জীবন হারিয়েছে আগে থেকে বিদ্যমান অসুস্থতা কিংবা কো-মরবিটির কারণে এবং এ রকম একটি প্রধান কো-মরবিডিটি হচ্ছে ডায়াবেটিস। একটি ডাটাবেজ বলছে, কেবল স্কটল্যান্ডে তিন লাখ ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে।

মাই ওয়ে ডিজিটাল হেলথের সহপ্রতিষ্ঠাতা ড. ডেবোরাহ ওয়েক, যিনি এটি শুরু করেছেন একাডেমিক প্রজেক্টের অংশ হিসেবে, যা পরে একটি উদ্যোগে পরিণত হয়েছে। ডাটাবেজগুলো ডাটা একসাথে রাখে এবং পরে প্রবণতা বোঝার জন্য মেশিন লার্নিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ব্যবহার করে। ওয়েক ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরাতে মেডিকেল ইনফরমেশনস অ্যান্ড ডায়াবেটিস কেয়ারে ডাক্তার এবং ক্লিনিকাল রিডার হিসেবে কাজ করেন। সম্প্রতি তিনি কথা বলেছেন কভিড-১৯ সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জের ক্ষেত্রে ডাটাবেজ কীভাবে কাজ করে তা নিয়ে।

ওয়েক বলেন, ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে স্কটল্যান্ডে ডায়াবেটিস মোকাবেলায় আমরা জাতীয় উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা সব ধরনের হেলথ কেয়ার সিস্টেমের সব ধরনের ডাটাকে যুক্ত করেছি। আমরা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের কাছ থেকে ডাটা এনেছি। ব্যাপারটা এমন যে গ্লুকোজ মিটার থেকে ডাটা এনেছি। দেখা যাচ্ছে তারা হয়তো বাসায় রক্তের শর্করার পরিমাণ হিসাব করল, ওজন মাপল, রক্তচাপ মাপল এবং আরো অন্যান্য কাজ করল যা তারা বাসায় করতে পারে। আমরা সেই ডাটাকে ব্যবহার করি নিজেদের জনগণকে আরো ভালোভাবে বুঝতে।

আমরা এ ডাটাবেজ ব্যবহার করি ক্লিনিশিয়ানদের সঙ্গে, যা আমাদের বুঝতে সহায়তা করে রোগীদের সমস্যা সম্পর্কে বুঝতে। ডাটাগুলোর কম্পিউটার সিমুলেশন এ রোগীদের কাছে আমাদের পদ্ধতির ব্যক্তিগতকরণে সহায়তা করতে পারে। এটি উচ্চঝুঁকিসম্পন্ন রোগীদের বাছাই করতে পারে। তিনি আরো বলেন, এ ডাটাবেজটি স্বতন্ত্র। দেশের ৯৯.৯৯ শতাংশ ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগী এতে রেজিস্ট্রেশন করেছে। এমনকি যেদিন তাদের ডায়াবেটিস শনাক্ত হয় সেদিনই সিস্টেম তাদের এখানে যুক্ত করে। এ ডাটাবেজ পুরোপুরিভাবে আপডেটেড।

কভিড-১৯-এর সময়ে এ বিষয়টি যেভাবে কাজ করে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর ফলে যেসব রোগীকে সামনাসামনি দেখতে হয় তার সংখ্যা হ্রাস পায়।

কভিড-১৯ সংক্রমণের পর ডায়াবেটিস কীভাবে ভূমিকা রাখে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা জানি যে ডায়াবেটির ভালো কিছু না, বিশেষ করে টাইপ-২ ডায়াবেটিস। যত দীর্ঘ সময় আপনার এটি থাকবে, তত বেশি আপনার মাঝে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, অঙ্গচ্ছেদ, কিডনি জটিলতা, অন্ধত্বসহ নানা সমস্যা দেখা যেতে শুরু করে।

কভিড-১৯-এর ক্ষেত্রে আমরা সম্প্রতি দেখেছি যে সংক্রমিত ডায়াবেটিস রোগীরা উচ্চমাত্রার ঝুঁকিতে আছে। তারা হয় মারাত্মকভাবে সংক্রমিত হচ্ছে কিংবা কভিড-১৯-এর কারণে শেষ পর্যন্ত মারাই যাচ্ছে। এমনকি যুক্তরজ্যে কভিড-১৯-এ যারা মারা গেছে তাদের ২৫-৩০ শতাংশের মাঝে ডায়াবেটিস ছিল। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কভিড-১৯-এ যারা মারা গেছে তাদের সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশের ডায়াবেটিস ছিল। আর আমরা জানি, এখানে প্রধান ফ্যাক্টর হচ্ছে বয়স। যদি আপনার বয়স বেশি হয় তবে আপনার পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।

পাশাপাশি এটি স্থূলতার সঙ্গেও সম্পৃক্ত। আপনার ওজন যত বেশি হবে আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ তত বেশি হবে। সাধারণত আমাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ভালো একটি নির্দেশক হতে পারে, কভিড-১৯-এর মতো পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া ও ফলাফল কেমন হবে সে সম্পর্কে জানতে। তাই আমরা মানুষকে যত বেশি তাদের ওজন, রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল হ্রাস করতে সাহায্য করতে পারি, এমন মহামারী পরিস্থিতিতে আমরা এসবের ইতিবাচক প্রভাব দেখতে পারব।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত