সিলেটটুডে ডেস্ক

১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০১:২৭

ডাক্তারকে যেসব প্রশ্ন অবশ্যই করবেন

প্রায়ই দেখা যায়, ভালো ডাক্তারের সিরিয়াল পেতে আমাদের অনেক সময় লেগে যায়। তার পর দাঁড়াতে হয় লম্বা লাইনে। রোগীর চাপে ডাক্তাররাও খুব বেশি সময় দিতে পারেন না। মূলত রোগ নিয়ে অনুসন্ধান আর কথাবার্তায়ই ডাক্তারের অ্যাপয়ন্টমেন্টের সময়টুকু কেটে যায়। চেম্বার থেকে বের হওয়ার পর আমাদের অনেক প্রশ্ন মনে পড়ে, যেগুলো ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করা হয়নি। তাড়াহুড়োয় ডাক্তার ও আপনি এমন ভুল করতেই পারেন। তাই নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে নিচের মৌলিক প্রশ্নগুলো মনে রাখুন। এগুলো অবশ্যই ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করবেন। এতে আপনার সুস্থ থাকার সম্ভাবনা বাড়বে।

আমার ওজন কত?

এটা ভাবার কোনো কারণ নেই যে, ডাক্তার আপনার ওজন নিয়ে কিছু বলেননি, তাই এ নিয়ে আপনার চিন্তা করার কিছু নেই। পশ্চিমা দুনিয়ায় বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, ডাক্তার ও রোগীর সাক্ষাতে বডি ম্যাস ইনডেক্স বা বিএমআইয়ের বিষয়টি প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে অনালোচিত থাকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ওজনের বিষয়টি নির্ণয় করা হয় না। তাই নিজেই ডাক্তারের কাছে জিজ্ঞেস করে নিন আপনার বিএমআই ঠিকঠাক আছে কিনা।

ডাক্তার কি হাত ধুয়েছেন?

ডাক্তাররা সবাইকে হাত ধোয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু তারা নিজেরাই অনেক সময় এ রীতি মানেন না। অনেক সময় বারবার হাত ধোয়ার চাপে ডাক্তাররা হয়তো রোগী দেখার সময় হাত ধোয়ার প্রতি কিছুটা আলসেমিতে ভোগেন। তাই ডাক্তার আপনাকে পরীক্ষা করার আগে হাত ধুয়েছেন কিনা, সেটা জিজ্ঞেস করাটা বিব্রতকর হলেও করা উচিত। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রফেশনাল ইন ইনফেকশন কনট্রোল অ্যান্ড এপিডেমিওলজির গবেষকরা দেখেছেন, রোগীদের তরফ থেকে এ ধরনের জিজ্ঞাসা থাকলে ডাক্তাররা হাত জীবাণুমুক্ত করে রোগী দেখার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সচেতন থাকেন। অবশ্যই ডাক্তারকে বিনয়ের সঙ্গেই তার হাত ধোয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করবেন এবং বলবেন যে, আপনি ইনফেকশন নিয়ে দুশ্চিন্তা করেন, তাই বিষয়টি জানতে চাইছেন।

গুগল ডাক্তার!

কোনো শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে এখন অনেকেই গুগলে অনুন্ধান করে নিজের রোগ সম্পর্কে ধারণা পেতে চান। এমনকি অনেকে অনলাইনের দেয়া তথ্য অনুসারে ওষুধও খেয়ে থাকেন। লক্ষণ দেখে রোগ ও ওষুধ নির্ণয়ে বিভিন্ন অ্যাপসও পাওয়া যায়। গবেষকরা দেখেছেন, এসব অ্যাপস বেশির ভাগ সময়ই ভুল তথ্য দেয়। তাই গুগল বা অ্যাপস ডাক্তারি সেবার ব্যাপারে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। এ ধরনের কিছু সেবা নিলে সেটা অবশ্যই ডাক্তারকে জানাবেন এবং তার কাছে জানতে চাইবেন কোনো নির্ভরযোগ্য অনলাইন বা অ্যাপসের কথা, যেখান থেকে আপনি রোগ-সম্পর্কিত সঠিক তথ্য পেতে পারেন।

আমি কি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত?

আর্থিক, পারিবারিক, সামজিক প্রভৃতি কারণেই আমরা মানসিক চাপে থাকতে পারি, এমনকি রোগও আমাদের মনে দুশ্চিন্তার জন্ম দেয়। কিন্তু মূল রোগের চিকিত্সার সময় এ মানসিক সমস্যার বিষয়টি প্রায় সবখানেই উহ্য থাকে। এ নিয়ে ডাক্তার বা রোগী কেউই কথা বলতে আগ্রহী থাকেন না। তাই নিজে উদ্যোগী হয়ে ডাক্তারকে নিজের মানসিক অবস্থার কথা জানান। এতে ডাক্তার হয়তো আপনাকে মূল্যবান পরামর্শ দিতে পারবেন।

এটা কি হার্ট অ্যাটাক?

বুকে ব্যথা, মাথা ঘুরানো, বমি ভাব, শ্বাস নিতে সমস্যা— এগুলো সবই হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে আপনাকে ডাক্তারের কাছে সবকিছু সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে। যুক্তরাজ্যে এ বছর চালানো এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৩০ শতাংশ হার্ট অ্যাটাকের রোগী ভুল চিকিত্সা পেয়েছেন। কারণ তাদের হার্ট অ্যাটাকের বিষয়টি সঠিক বর্ণনার অভাবে নির্ণীত হয়নি। এটা বেশি হয় নারীদের ক্ষেত্রে। তাই বুকে ব্যথা বা হার্ট অ্যাটাক-সংক্রান্ত লক্ষণগুলো ডাক্তারের কাছে পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করতে হবে এবং একটি বিষয় স্পষ্ট করে বলতে হবে যে, এ ধরনের ব্যথা আগে আপনার কখনো হয়নি। এতে ডাক্তার আপনার সমস্যাটি হার্ট অ্যাটাক কিনা সেটা সহজেই নির্ণয় করতে পারবেন। এবং আপনার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে কিনা, সেটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডাক্তারকে দরকারমতো পরীক্ষা করার কথাও বলতে পারেন।


সূত্র: প্রিভেনশন ডটকম

আপনার মন্তব্য

আলোচিত