সিলেটটুডে ডেস্ক:

২২ এপ্রিল, ২০২১ ২০:৩০

সরকার করোনা মোকাবিলায় ভুল পথে আছে: ডা. জাফরুল্লাহ

করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার ভুল পথে আছে বলে মন্তব্য করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘সরকার কখনো জনগণের কথা ভাবে না। তাই আজকে এর মধ্য দিয়ে সম্মিলিত প্রচেষ্টা খুব অব্যাহত রাখতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাতে জনগণ জিতবেই, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।’

এসময় তিনি সরকারকে লকডাউনে মানুষের হাহাকার বন্ধে ঘরে ঘরে খাদ্য পৌঁছানোর আহ্বানও জানান।

বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নাগরিক প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন তিনি।

‘লকডাউনে মানুষের হাহাকার বন্ধে- ঘরে ঘরে খাদ্য পৌঁছাও’ শিরোনামে নাগরিক প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচি দেশের বিশিষ্ট নাগরিকগণ। এ সময় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর বরাবর খোলা চিঠি পাঠান।

তিনি বলেন, ‘দুঃখের কথা কী বলব, বাঁশখালীতে আরও দুইজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আমাদের হাইকোর্ট এখনো সুয়োমোটো করে সরকারকে আসামি করে মাঠে হাজির করছে না। তাদের বলা উচিত।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মাওলানা ভাসানীর মতো বলতে বাধ্য হবো-আপনারা যদি এখনো সতর্ক না হন, সংশোধন হওয়ার চেষ্টা না করেন তাহলে জনগণও হয়ত আপনাদের ট্যাক্স দেওয়া বন্ধ করে দেবে। তাতে দেশে নৈরাজ্য হবে, আমরা সুশাসন চাই, আমরা নৈরাজ্য চাই না। আমাদের ওপর অত্যাচারের খড়গ কমান।’

এ ট্রাস্টি বলেন, ‘সোয়া দুই কোটি পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সাড়ে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ হলে প্রতিটি পরিবার সোয়া ৪ টাকা করে পাবে। অবস্থা প্রতিদিনই খারাপের দিকে যাচ্ছে। সব ধরনের গবেষণা বলেছে, বাংলাদেশ দরিদ্র পরিবার সোয়া ২ কোটি অতিক্রম করেছে। এই সোয়া দুই কোটি পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রী সাড়ে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। এর মানে হচ্ছে প্রতি পরিবারে সোয়া ৪ টাকা করে পাবে। সোয়া ৪ টাকা দিয়ে রমজান মাসে কী খেতে পারেন? এই জাতীয় মশকরা করছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। আজ উনাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া দরকার যে এই মশকরার দিন ফুরিয়ে আসছে।’

রাজনীতিবিদদের উদ্দেশে করে তিনি বলেন, ‘আমাদের যত রাজনীতিবিদ আছেন, বিএনপি, কমিউনিস্ট পার্টি, বাসদ, সবাই মিলে দেশের এক লাখ ধনী পরিবার, ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সাত দিন চেষ্টা করলে ১০ কোটি টাকা উঠাতে পারি না? যারা মুক্তিযুদ্ধের সুবিধা নিয়ে, বাংলাদেশের সুবিধা নিয়ে কোটি কোটি টাকা মালিক হয়েছেন তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই আপনারা যদি সাহায্যে না নামেন তাহলে জাতি আপনাদের ক্ষমা করবে না।

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ‘উন্নত বিশ্ব সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে লকডাউন দিলেও বাংলাদেশে কোনো পরিকল্পনা ছাড়া লকডাউন দিয়েছে। আর একারণেই সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে জীবিকার তাগিদে। নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্যের চাহিদা নিশ্চিত করে লকডাউনের আহ্বান জানান বক্তারা।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতীকী এই অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন-নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ড. রেজা কিবরিয়া প্রমুখ ।

কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন-নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের ড. রেজা কিবরিয়া, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, ইশতিয়াক আজিজ উলফত ও সাদেক খান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা দিলারা চৌধুরী, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা রেহনোমা আহমেদ, নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়ক শহীদুল্লাহ কায়সার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু ও ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান, নারীর জন্য সুশাসনের নির্বাহী পরিচালক রুবি আমাতুল্লাহ, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ভূঁইয়া প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত