সিলেটটুডে ডেস্ক

২৩ এপ্রিল, ২০২১ ১৬:২৭

তাণ্ডবের প্রতিবাদে হেফাজত নেতার পদত্যাগ

হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের ঘটনায় জড়িতদের বিচার চেয়ে পদত্যাগ করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী।

শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সাংবাদিকদের কাছে লিখিত বক্তব্য পাঠিয়ে এতথ্য জানান তিনি।

এর আগে, সকাল সাড়ে ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে আব্দুর রহিম কাসেমীর পূর্ব নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন থাকলেও তা স্থগিত করা হয়।

মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী মাদরাসা জামিয়া ইউনুছিয়া ইসলামিয়াতে খেদমতে ছিলাম। কিন্তু মতাদর্শগত ভিন্নতার কারণে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাকে ২০২০ সালের ডিসেম্বরের ১ তারিখে জামিয়ার সব দায়-দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এরপর থেকে আমি হেফাজতে ইসলামের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য থাকলেও সব কার্যক্রমে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়। তাই আমি আমার নিজস্ব তত্ত্বাবধানে মাদরাসার ছাত্রদের নিয়ে একান্তভাবে ব্যস্ত রয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী হেফাজতে ইসলামের ডাকে যে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, তা নজিরবিহীন ও অমানবিক। দেশ ও জনগণের জানমালের ক্ষতি কোনোভাবেই ইসলামসম্মত হতে পারে না। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে এ সমস্ত কার্যক্রম থেকে নিষ্ক্রিয় থাকি এবং আমার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত মাদরাসাসমূহের শিক্ষক ও ছাত্রদের এ সমস্ত দেশ ও ইসলামবিরোধী কাজে যোগদান না করতে বাধ্য করি।’

কাসেমী আরও বলেন, ‘গত ২৬ মার্চ রেলওয়ে স্টেশনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আক্রমণ ও ক্ষয়ক্ষতি করা এবং ২৭ ও ২৮ মার্চ হরতাল চলাকালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ জানমালের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়, তাতে আমি এবং আমার মাদরাসার কোনো ছাত্র অংশগ্রহণ করেনি। আমি হেফাজতে ইসলামের চলমান কোনো কার্যক্রমের সঙ্গেও জড়িত নই। তাদের সব ধরনের নাশকতামূলক কার্যক্রমকে শরীয়তসম্মতভাবে অবৈধ মনে করি। আমি আনুষ্ঠানিকভাবে হেফাজতে ইসলামের সব কার্যক্রম ও জাতীয় এবং জেলা কমিটির পদসমূহ থেকে পদত্যাগ করছি। যাদের প্ররোচনায় দেশ ও জনগণের জানমালের এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকার ও প্রশাসনকে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।’

উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামে মাদরাসাছাত্রদের ওপর পুলিশের হামলার খবরে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালান হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। এসময় পুলিশ সুপারের কার্যালয়, প্রেসক্লাব, জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়, মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়, পৌরসভা কার্যালয়, জেলা পরিষদ কার্যালয় ও ডাকবাংলো, খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা ভবন, আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, আলাউদ্দিন খাঁ পৌরমিলনায়তন ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরসহ ৩৮টি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় ১২ জন নিহত হন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত