সিলেটটুডে ডেস্ক

১৯ জুলাই, ২০২১ ২০:০২

৩০ বছর হলেই নিবন্ধন করা যাবে করোনা টিকার

৩০ বছর হলেই করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার জন্য নিবন্ধন করা যাবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সরকারি এই সংস্থাটির এমআইএসের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সোমবার (১৯ জুলাই) তিনি বলেন, ‘কাল এ বিষয়ে একটি মিটিং করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়া প্রতি এক সপ্তাহ পরপর ৫ বছর কমিয়ে বয়সসীমা নির্ধারণ করা হবে।’

গত ৫ জুলাই টিকা নিবন্ধনের বয়সসীমা কমিয়ে ৩৫ করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম।

টিকা সংকটের কারণে গত ৫ মে নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মূলত দেশে করোনা প্রতিরোধী টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছিল অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়ে।

ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত এ টিকার ৩ কোটি ৪০ লাখ ডোজ কেনার জন্য চুক্তি করেছিল সরকার। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা দেয়ার কথা ছিল সিরামের। তবে ৭০ লাখ পাঠানোর পর সিরাম আর টিকা দিতে পারেনি সরকারি নিষেধাজ্ঞায়।কেনা টিকার বাইরে বাংলাদেশকে ৩৩ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে ভারত সরকার।

ভারত থেকে টিকা আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরই টিকার বিকল্প উৎসের সন্ধানে নামে বাংলাদেশ। চীন ও রাশিয়ার টিকা পেতে নানা ধরনের আলোচনা চলছে। চীন থেকে এরই মধ্যে টিকা আসা শুরু হয়েছে। টিকা আসছে ন্যায্যতার ভিত্তিতে বিশ্বজুড়ে করোনা টিকা বণ্টনের জোট কোভ্যাক্স থেকেও।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে মডার্নার ৩০ লাখ টিকার এই চালান এলে কেবল জুলাই মাসে দেশে আসা টিকার ডোজের সংখ্যা দাঁড়াবে ৯৫ লাখ। আগস্টে আরও এক কোটির বেশি টিকা পাওয়া যাবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে জানিয়েছে একই মন্ত্রণালয়।

চলতি মাসের শুরুতে ২ ও ৩ জুলাই মিলিয়ে মডার্নার ২৫ লাখ টিকা ছাড়াও আসে চীন থেকে কেনা টিকার প্রথম চালানের ২০ লাখ। ১৭ জুলাই রাতে দুই চালানে আসে আরও ২০ লাখ। বিভিন্ন উৎস থেকে আরও টিকা পাওয়ার আশ্বাস মিলেছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতেই আবার গণটিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিল সরকার। এবার টিকাদানের পরিসরও বাড়াচ্ছে সরকার। বয়সের সীমা কমিয়ে ৩০ বছর করা হয়েছে। এর আগে টিকাগ্রহীতার বয়সের সীমা ৩৫ বছর নির্ধারণ করেছিল সরকার।

এবার যাদের অগ্রাধিকার

করোনা প্রতিরোধী টিকা প্রদানে এবার যাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে, তারা হলেন করোনা মোকাবিলায় সামনের সারির যোদ্ধা, নির্বাচিত প্রতিনিধি, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার কর্মকর্তারা, সব ধর্মের প্রতিনিধি, মৃতদেহ সংস্কারকাজে নিয়োজিত কর্মীরা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, নিষ্কাশন ও ফায়ার সার্ভিসের প্রথম সারির কর্মকর্তা, রেলওয়ে স্টেশন, বিমানবন্দর, নৌবন্দর, স্থলবন্দরের কর্মচারীরা, সামরিক বাহিনীর সদস্য, জেলা-উপজেলায় জরুরি কাজে নিয়োজিত সরকারি কর্মচারী, ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারী, জাতীয় দলের খেলোয়াড়, চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট বিভাগের ছাত্র-ছাত্রী, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের ছাত্র-ছাত্রী, গণমাধ্যমকর্মী, স্বাস্থ্য ও পরিবার মন্ত্রণালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী, অনুমোদিত সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাষ্ট্র পরিচালনায় নিয়োজিত অপরিহার্য কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

যে প্রক্রিয়ায় নিবন্ধন

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, সুরক্ষা অ্যাপে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। ফোন ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, নাম, জন্মতারিখের পাশাপাশি কোনো শারীরিক জটিলতা আছে কি না, পেশা কি তা-ও জানাতে হবে।

স্মার্টফোনে ইন্টারনেট সংযুক্ত করে অ্যাপটি ডাউনলোড করা যাবে। অ্যাপে তথ্য দিলে টিকার আপডেট সম্পর্কে গ্রহীতাদের এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ টিকা বিতরণ করতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত