সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ আগস্ট, ২০২১ ১২:২২

কঠোর লকডাউন বাড়বে কি না, জানা যাবে আজ

করোনার ঊর্ধ্বগামী প্রবণতা ঠেকাতে সরকারঘোষিত চলমান কঠোর লকডাউনের সময়সীমা আরও বাড়ানো হবে কি না তা জানা যাবে আজ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সুপারিশ বিবেচনা ও পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে মঙ্গলবার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ডেকেছে সরকার।

বেলা ১১টায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে জুম মিটিং শুরু হয়েছে। সেখানে ১২ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, ১৬ সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশ মহাপরিদর্শক, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তা এবং আইইডিসিআর পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টরা অংশ নেবেন। মিটিংয়ে লকডাউনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব (মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখা) মো. রেজাউল ইসলাম।

করোনার প্রকোপ রোধে চলমান কঠোর বিধিনিষেধ শেষ হবে আগামী ৫ আগস্ট। এরপর সেই বিধিনিষেধ আরও বাড়ানো হবে নাকি শিথিল করা হবে সেটা নিয়ে আলোচনা চলছে। মঙ্গলবার সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিথিলতা আরোপ করে লকডাউন আরও ১০ দিন বাড়ানো হতে পারে। অর্ধেক জনবল নিয়ে চালু হতে পারে সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলো। এছাড়া গণপরিবহনও সীমিত পরিসরে চালানোর কথা ভাবা হচ্ছে। মার্কেট-শপিংমলসহ অন্যান্য দোকানপাটও শর্তসাপেক্ষে খোলার চিন্তা রয়েছে। কারণ সাধারণ মানুষ কোনোভাবেই আর লকডাউন চাচ্ছে না।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গত শনিবার এ বিষয়ে বলেছিলেন- ‘লকডাউন বাড়ানোর বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ আমাদের মাথায় আছে। কারণ সব কিছুর সমন্বয় আমাদের করতে হবে। সেজন্য আমরা বলছি যে, একটু সময় নেব। ৩ বা ৪ আগস্ট এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’

সরকারের একটি সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে চলমান কঠোর বিধিনিষেধ আরও ১০ দিন বাড়ানোর সুপারিশ রয়েছে। সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরাও আরও অন্তত এক সপ্তাহ কঠোর বিধিনিষেধ বাড়ানোর কথা ভাবছেন। তবে মানুষের জীবন-জীবিকার কথা বিবেচনা করে বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করার আলোচনাও আছে তাদের মধ্যে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় আসতে পারে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৫ আগস্টের পর আরও সাত দিনের জন্য বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়লে সেক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি অফিস সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হতে পারে। সীমিত পরিসরে চালু করা হতে পারে গণপরিবহন। রপ্তানিমুখী শিল্প-কলকারখানা ইতিমধ্যে চালু করা হয়েছে, সেটি চালুই থাকবে। এছাড়া দোকানপাট, হোটেল-রেস্তোরাঁ খুলে দেওয়ার দাবিও বিবেচনায় আসতে পারে।

এর আগে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটি ৫ আগস্টের পরও বিধিনিষেধ বহাল রাখার সুপারিশ করে। মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদের এ বৈঠকের পর সুপারিশগুলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে। সেখান থেকে অনুমোদনের পর বুধবার এ বিষয়ে চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে বিধিনিষেধ চলছে, যা ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। বিধিনিষেধের মধ্যেই গত শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক আদেশে জানানো হয়, ১ আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী সব শিল্প ও কলকারখানা চলমান বিধিনিষেধের আওতাবহির্ভূত করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের পর শ্রমিকেরা গ্রামের বাড়ি থেকে দুর্ভোগ নিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন কলকারখানার অভিমুখে রওনা হন। একপর্যায়ে রবিবার দুপুর পর্যন্ত গণপরিবহন চালুর অনুমোদন দেয় সরকার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত