সিলেটটুডে ডেস্ক

২৫ অক্টোবর, ২০২১ ০৩:৫৭

মানুষ বেশি ভাত খায় বলে চালের ওপর চাপ: কৃষিমন্ত্রী

দেশের মানুষ অধিক ভাত খায় বলে চালের ওপর বেশি চাপ পড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক। এ জন্য তিনি খাদ্যাভ্যাস পাল্টানোর তাগিদ দিয়েছেন।

রোববার রাজধানীতে এক কৃষি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এই মন্তব্য করেন।

‘বাংলাদেশের ৫০ বছর, কৃষি রূপান্তর অর্জন’ শীর্ষক এই সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরাম ও বণিক বার্তা।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অনেক বেশি চাল খাই, ভাত খাই। এজন্য চালের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। আমরা দিনে প্রায় ৪০০ গ্রাম চাল খাই অথচ পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষ ২০০ গ্রাম চালও খায় না।

তিনি বলেন, ‘খাদ্যের অভাব নেই দেশে। নেই খাদ্যের সংকট ও খাবারের জন্য হাহাকার। কিন্তু মানুষ অধিক ভাত খায় বলে চালের ওপর বেশি চাপ পড়ছে। এতে প্রায়শ সংকট দেখা দিচ্ছে। বাড়ছে দামও।’

ধানজাতীয় দানাদার খাদ্যে বাংলাদেশকে সফল বলেও দাবি করেন মন্ত্রী। বলেন, খাদ্যেও দেশ অনেকটা স্বয়ংসম্পূর্ণ। আগামী পাঁচ থেকে ছয় বছর পর দেশেই সারা বছর দেশে আম পাওয়া যাবে বলেও তথ্য দেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমরা এখন কৃষিপণ্য রপ্তানিও করছি। তবে এই রপ্তানি সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দিতে হবে। সরকারের লক্ষ্য এখন খাদ্যে পরিপূর্ণ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন। এর পাশাপাশি পুষ্টিজাতীয় খাদ্য নিশ্চিত করতেও উদ্যোগী হয়েছে সরকার। তবে এরজন্য কৃষির বাণিজ্যিক রূপান্তর দরকার।’

বাংলাদেশ পরিসংখ্যার ব্যুরোর হিসাবে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশে চালের উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ৪৮ লাখ টন। ২০২০ সালে উৎপাদন বেড়ে ৪ কোটি টন ছাড়িয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (ইফপ্রি) গবেষণা তথ্যমতে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে মানুষের দৈনিক মাথাপিছু চাল খাওয়ার পরিমাণ ছিল ৩৯৬ দশমিক ৬ গ্রাম। সংস্থাটির ২০১৬ সালের হিসাবে ছিল ৪২৬ গ্রাম।

দেশে কৃষি খাতের অবদান তুলে ধরে আবদুর রাজ্জাক বলেন, কৃষি সব সময় বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটা বিরাট জায়গাজুড়ে ছিল। কৃষির গুরুত্ব কখনই কমবে না। দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে কৃষিকে গুরুত্ব দিতেই হবে।

কৃষি উদ্ভাবনে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের সফলতার কথা উল্লেখ করেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা অমৃতা প্রজাতির আম উদ্ভাবন করেছেন, যার স্বাদ মোটামুটি ভালো। এর আগে উদ্ভাবন হয়েছে গোরমতি, সেটার স্বাদ হিমসাগর বা অন্যান্য দেশী আমের মতোই। এখন দেশে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে আম পাওয়া যাচ্ছে। কেবল আম নয়, আমরা কৃষির অনেক ক্ষেত্রেই চাষের মৌসুম বাড়াচ্ছি, এটা আমাদের অর্জন।

মন্ত্রী বলেন, অর্থনীতির সব ক্ষেত্রেই বর্তমান সরকার অসামান্য সফলতা অর্জন করেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের গ্লোবাল ইকোনমিক রিভিউতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান ও ভারতে মহামারীর কারণে প্রবৃদ্ধি নিম্নমুখী। সেখানে বাংলাদেশ ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এত প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল।

বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশ গত নয় বছরে ২৫ ভাগ এগিয়েছে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী দুই দেশ পাকিস্তান ও ভারতের চেয়ে এ সূচকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে আছে। খাদ্যনিরাপত্তার এটিও একটি ভালো নির্দেশক। এর অর্থ হলো আমাদের দেশের মানুষ, শিশুরা ভালো খাবার পাচ্ছে। এ ধারা আমরা অব্যাহত রাখতে চাই। সেজন্য সব ধরনের পদক্ষেপও নিচ্ছে সরকার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত