সিলেটটুডে ডেস্ক

২৭ অক্টোবর, ২০২১ ০৩:৩০

ভাত কম খেতে বলেননি কৃষিমন্ত্রী: মন্ত্রণালয়

ফাইল ছবি

মানুষ বেশি ভাত খায় বলে দেশে চালের ঘাটতি দেখা দিয়েছে- কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক এমন মন্তব্য করেছেন জানিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো তথ্য প্রত্যাখ্যান করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্যকে ভুলভাবে উদ্ধৃত হয়েছে বলে দাবি করা হয়।

কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রাজ্জাক ওই বিবৃতিতে দাবি করেছেন, ভাত কম খেতে বলেননি তিনি।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মন্ত্রীর বক্তব্যকে ভুল ও আংশিকভাবে উপস্থাপন করে ভাত কম খাওয়ার বিষয়ে দুই-একটি গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিত্তিহীন ও অসত্য তথ্য প্রচার করা হয়েছে।

‘রোববার সকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘বাংলাদেশের ৫০ বছর: কৃষির রূপান্তর ও অর্জন’ শীর্ষক সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর বক্তব্যের অডিও ও ভিডিও কৃষি মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত আছে। ওই অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্যের রেকর্ড তাদের কাছেও আছে।

‘সেই বক্তব্যের কোথাও এ রকম কথা মন্ত্রী বলেননি। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কৃষিমন্ত্রীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে এই ভিত্তিহীন ও অসত্য সংবাদ প্রচারিত হয়েছে।’

চালের সংকট কমাতে কৃষিমন্ত্রী দেশের মানুষকে ভাত কম খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জানিয়ে রোববার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ ধরনের তথ্য ছড়িয়ে পড়ে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয় কৃষিমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা অনেক বেশি চাল খাই, ভাত খাই। এ জন্য চালের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। আমরা দিনে প্রায় ৪০০ গ্রাম চাল খাই অথচ পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষ ২০০ গ্রাম চালও খায় না।

‘খাদ্যের অভাব নেই দেশে। নেই খাদ্যের সংকট ও খাবারের জন্য হাহাকার। কিন্তু মানুষ অধিক ভাত খায় বলে চালের ওপর বেশি চাপ পড়ছে। এতে প্রায়শ সংকট দেখা দিচ্ছে। বাড়ছে দামও।’

ঘটনার দুই দিন পর পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয় ওই দিন মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে দানা জাতীয় খাদ্যে সফল হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ জনপ্রতি ২০০ গ্রামের মতো চাল খেয়ে থাকে, কিন্তু আমাদের দেশে চাল খাওয়ার পরিমাণ জনপ্রতি প্রায় ৪০০ গ্রাম; যা ক্রমশ কমছে।

‘এখন আমাদের লক্ষ্য পুষ্টিজাতীয় খাবার দুধ, মাছ, মাংস, ডিম, ফলমূল প্রভৃতি গ্রহণের পরিমাণ বাড়িয়ে ভাত খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে আনা। এটি করতে পারলে চালের ব্যবহার কমে আসবে ও জনগণ পুষ্টিসম্মত খাবারও পাবে।’

বিবৃতিতে দেয়া তথ্যানুযায়ী কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারি রয়েছে, তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের মানুষের খাদ্যের কষ্ট হয়নি। কোনো মানুষ না খেয়ে নেই। কোনো মানুষের মাঝে হাহাকার নেই। এমন পরিস্থিতিতে এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হলো সবার জন্য পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্যের যোগান দেয়া।

‘সে জন্য বাংলাদেশকে আমরা আধুনিক কৃষিতে নিয়ে যেতে চাই। কৃষিকে লাভজনক করতে চাই। আমরা বাংলাদেশকে এগ্রোপ্রসেসিং, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে নিয়ে যেতে চাই।’

কৃষিমন্ত্রী পুষ্টি জাতীয় খাবার দুধ, মাছ, মাংস, ডিম, শাক-সবজি, ফলমূল প্রভৃতি খাওয়া বা গ্রহণের পরিমাণ বাড়াতে সরকারের প্রচেষ্টার কথা বলেছেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত