সিলেটটুডে ডেস্ক:

২৮ এপ্রিল, ২০২২ ১৯:০৮

এবার পটুয়াখালীতে মন্দিরে কোরআন রাখতে গিয়ে ধরা

পটুয়াখালীর বাউফলে মন্দিরে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখার অভিযোগে ইদ্রিস খান নামে এক ব্যক্তি আটক হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মামলা হয়েছে।

৪৫ বছর বয়স্ক ইদ্রিস খানের গ্রামের বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জের শাপলাখালি ইউনিয়নে। তবে তিনি পটুয়াখালীর দুমকীর জলিসা এলাকায় বসবাস করেন।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়দের বরাতে তিনি বলেন, ‘বগা ইউনিয়নের উত্তর রাজনগর-পালপাড়া সর্বজনীন কালী মন্দিরে ভোরে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখার অভিযোগে তাকে আটক করে এলাকাবাসী। এরপর পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে আসে। তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মামলাও করেছে পুলিশ।’

ওসি জানান, কী কারণে ইদ্রিস মন্দিরে গিয়েছিল তা তদন্ত করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ইদ্রিসের কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।

বগা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হাসান জানান, ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের উত্তরপালপাড়ায় রাধা গোবিন্দ মন্দিরে তিনদিন ধরে নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান চলছিল। বুধবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে অপরিচিত এক ব্যক্তি মন্দিরে ঢুকতে চাইলে বাধা দেন পুরোহিত শুকরঞ্জন বৈরাগী। ওই ব্যক্তির মুখে দাড়ি ও হাতে ব্যাগ ছিল। এক পর্যায়ে তিনি চলে যান।

ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘যে কালী মন্দিরে কোরআন পাওয়া যায় সেটির অবস্থান রাধা গোবিন্দ মন্দির থেকে তিন শ মিটার দূরে। নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান থেকে ফেরার সময়ে সঞ্জয় পাল নামে স্থানীয় এক যুবক ওই কালী মন্দির থেকে অপরিচিত সেই ব্যক্তিকে বের হতে দেখেন।’

সঞ্জয় পাল বলেন, ‘কালী মন্দির থেকে ওই ব্যক্তিকে বের হতে দেখে তার নাম জানতে চাই। জবাবে তিনি বলেন ইদ্রিস। আমি এরপর প্রশ্ন করি, আপনি মন্দিরে কী করছেন। তিনি বলেন, সেজদা দিতে মন্দিরে গিয়েছিলাম। এর পর তিনি পালানোর চেষ্টা করলে আমি চিৎকার করি। তখন রাধা গোবিন্দ মন্দিরের লোকজন এসে তাকে আটক করে।‘

স্থানীয় লোকজন কালী মন্দিরের ঘটের ওপর একটি হাতব্যাগ দেখতে পায়, যার ভেতরে কোরাআন শরিফ ছিল। জিজ্ঞাসাবাদে ইদ্রিস কোরাআন শরিফ রাখার বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে পুলিশ ইদ্রিসকে আটক করে নিয়ে যায়।

রাধা গোবিন্দ মন্দিরের সভাপতি দিলীপ পাল বলেন, ‘বাউফলের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা হয়েছে। ওই ব্যক্তি কার প্ররোচনায় এই কাজ করেছে তা প্রশাসনের বের করা উচিত।’

এলাকায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগে গত বছর দুর্গাপূজায় সারা দেশে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্যে ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার একটি মণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়া যায়। এর জেরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা। পরে মন্দিরে কোরআন রাখার অভিযোগে ইকবাল নামে এক যুবক শনাক্ত হন। ইকবাল এখন কারাগারে আছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত