সিলেটটুডে ডেস্ক

২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ২১:২১

নারীর পোশাকের স্বাধীনতার বিক্ষোভে ইরানে নিহত ১৭

পুলিশ হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় ইরানে টানা সাতদিনের বিক্ষোভে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে ৮ জনই প্রাণ হারিয়েছেন বুধবার।

দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বৃহস্পতিবার জানায়, গত কয়েক দিনের ঘটনায় বিক্ষোভকারী ও পুলিশ সদস্যসহ প্রাণ হারিয়েছেন ১৭ জন। তবে নিহতদের পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়নি।

নরওয়েভিত্তিক কুর্দি অধিকার গোষ্ঠী হেনগাও-এর সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিক্ষোভে বুধবারই প্রাণ হারান নারী,শিশুসহ ৮ কুর্দি। আহত হয়েছেন অন্তত ২৮২ জন, গ্রেপ্তার হয়েছেন অনেক বিক্ষোভকারী।

ইরানের সংবাদ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের তাব্রিজ ও কাজভিন এবং রাজাভি খোরাসান প্রদেশের মাশহাদ শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আধা সামরিক বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে।

ফারস প্রদেশের শিরাজে বিক্ষোভ চলাকালীন মঙ্গলবার নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্য নিহত হন।

কুর্দি নারী মাহসা আমিনিকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানের ‘নৈতিকতা পুলিশ’ গ্রেপ্তার করে। ইরানের দক্ষিণাঞ্চল থেকে তেহরানে ঘুরতে আসা মাহসাকে একটি মেট্রো স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি সঠিকভাবে হিজাব করেননি।

পুলিশ হেফাজতে থাকার সময়েই মাহসা অসুস্থ হয়ে পড়েন, এরপর তিনি কোমায় চলে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শুক্রবার তার মৃত্যু হয়। পুলিশ মাহসাকে হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরিবারের অভিযোগ গ্রেপ্তারের পর তাকে পেটানো হয়।

মাহসার মৃত্যুর পর থেকেই উত্তাল ইরান। ফেসবুক ও টুইটারে #mahsaamini এবং #Mahsa_Amini হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে চলছে প্রতিবাদ। দেশটির বিভিন্ন জায়গায় নারীর পোশাকের স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে নিরাপত্তা বাহিনীর।

রয়টার্সের খবরে বলা হচ্ছে, কুর্দি অধ্যুষিত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বিক্ষোভটি কেন্দ্রীভূত হলেও সময়ের সঙ্গে অন্তত ৫০টি শহর ও গ্রামে তা ছড়িয়ে পড়েছে। ২০১৯ সালে গ্যাসোলিনের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে হওয়ার বিক্ষোভের পর এটাই সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ কর্মসূচি। ওই বিক্ষোভে প্রাণ হারিয়েছিলেন অন্তত ৩২১ জন।

এদিকে, তেহরান এবং কুর্দিস্তানের কিছু অংশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে ইরান সরকার। সীমিত করা হয়েছে ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপ পরিষেবা। সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়া বন্ধে এ পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। তবে তার আগেই, বিক্ষোভরত নারীদের হিজাব পুড়িয়ে ফেলা এবং কয়েকজনের চুল কেটে ফেলার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত