সিলেটটুডে ডেস্ক

১৬ মার্চ, ২০১৬ ২১:১৭

রিজার্ভ চুরি মামলার প্রতিবেদন ১৯ এপ্রিল

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির আলোচিত ঘটনায় মুদ্রা পাচার ও তথ্য প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে আগামী ১৯ এপ্রিল দিন ঠিক করেছে ঢাকার আদালত।

মামলার পরদিন বুধবার (১৬ মার্চ) হাকিম মাহবুবুর রহমান এই দিন ঠিক করেন বলে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই জালাল আহমেদ জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভে থাকা বাংলাদেশের অর্থ ‘হ্যাকিংয়ের’ মাধ্যমে চুরির এই ঘটনায় মুদ্রা পাচার এবং তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলাটি হয়েছে বলে জানান এসআই জালাল।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের একাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো. জোবায়ের বিন হুদার করা এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিআইডিকে।

চুরির জন্য হ্যাকারদের দায়ী করে করা এই মামলায় আসামির তালিকায় কারও নাম নেই।  

বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরির পর প্রায় দেড় মাস বিষয়টি গোপন রাখে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে ফিলিপাইন মিডিয়ায় এ সম্পর্কিত সংবাদ প্রকাশিত হলে তা ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশ মিডিয়ায়ও। এ ঘটনায় বেশ বিব্রতকর অবস্থার মুখোমুখি হয় সরকার। অবশেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে পদত্যাগ করতে হয়। দেশের মিডিয়ায় আসার চারদিন পর এ মামলাটি করলো বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কের ব্যাংক হিসাবে রক্ষিত বাংলাদেশের হিসাব থেকে ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরি করা হয়েছে। এর একটি অংশ (২০ মিলিয়ন) গেছে শ্রীলঙ্কায়, আরেকটি অংশ (৮১ মিলিয়ন) গেছে ফিলিপাইনে। সম্প্রতি ফিলিপাইনের একটি ইংরেজি দৈনিকে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তাতে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ফিলিপাইনে পাচার হওয়ার কথা উল্লেখ ছিল।

গত সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মোট ৮০০ কোটি টাকার সমপরিমাণ ডলার চুরি করে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কায়। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়। তবে চুরি যাওয়া অর্থের বড় অংশই উদ্ধার করা যায়নি।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ফিলিপাইনের ইনকোয়ারারের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের নিউইয়র্ক শাখায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০১ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৮০০ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এর মধ্যে ৮১ মিলিয়নই ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের পাঁচটি অ্যাকাউন্টে আসে।

কীভাবে ফিলিপাইনে অর্থ পাচার হয়ে গেল, সে সম্পর্কে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, দেশটির মাকাতি শহরে অবস্থিত রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের একটি শাখার মাধ্যমে ওই অর্থ ফিলিপাইনে আসে। এতে ওই ব্যাংকটির শাখা ব্যবস্থাপকের সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ মিলেছে। এরপর অবৈধভাবে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনকারী ফিলরেম নামের এক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তা চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোর কাছে। এভাবে হাতবদল হয়ে সবশেষে ফিলরেমের মাধ্যমে ওই ১০ কোটি ডলার ফিলিপাইন থেকে আবার অন্য দেশে পাচার হয়ে যায়। আর যে তিনটি ক্যাসিনোর হাত ঘুরে তা অন্য দেশে পাচার হয়েছে, সেগুলো হলো সোলাইরি রিসোর্ট অ্যান্ড ক্যাসিনো, সিটি অব ড্রিমস ম্যানিলা ও মাইডাস হোটেল অ্যান্ড ক্যাসিনো।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত