সিলেটটুডে ডেস্ক

০৫ মে, ২০১৬ ১৮:১৯

মানুষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিপক্ষে : খন্দকার মাহবুব

দেশের মানুষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে নয় উল্লেখ করে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়, বিশেষ উদ্দেশ্যে এই বিচার করা হচ্ছে। একের পর এক ফাঁসি দেয়া হচ্ছে বিশেষ উদ্দেশ্যে।

দেশের মানুষ যুদ্ধাপরাধের বিচারের ব্যাপারে কী মনোভাব প্রকাশ করে তা গোয়েন্দা বাহিনীর মাধ্যমে খবর নিয়েও দেখতে বলেছেন তিনি।

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকার পর এক প্রতিক্রিয়ায় তার প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব এসব মন্তব্য করেন।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ‘জাতি স্বস্তি পাচ্ছে, পুরো জাতির মতো আমরা আনন্দিত’ বলে মন্তব্য করলেও নিজামীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন এ রায়ে নাখোশ।

অন্য বিচারের সঙ্গে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের তুলনা ভুল হবে উল্লেখ করে খন্দকার মাহবুব আরও বলেন, ‘যে সাক্ষ্য-প্রমাণ এই আইন (আইসিটি) অনুযায়ী দেয়া হয়েছে, আমাদের সর্বোচ্চ আদালত সেই আইন ও সাক্ষ্য অনুযায়ী বিচার করেছে। তাই স্বাভাবিকভাবে আমরা মনে করি অন্যান্য বিচারের সঙ্গে এর তুলনা করা হলে ভুল হবে। আমি সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করব না। আমার কোনো বক্তব্য থাকবে না।’

মানবতাবিরোধী অপরাধের জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পথে এখন একটি মাত্র আইনগত বাধাই রয়েছে। তবে সেটি যদি নিজামী চান তবে প্রয়োগ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিাক্ষা চাইবেন কি না এটা তার নিজস্ব এখতিয়ার বলেও জানিয়েছেন তার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।

মৃত্যুদণ্ড দেয়া আইসিটি আইনের যথার্থতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘যে আইনে এই বিচার করা হচ্ছে সে (আইসিটি) আইনটি করা হয়েছিল যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য। এই আইনে সাক্ষ্য-প্রমাণের যে বিধান আইনে আছে, তাতে আইনের শাসন বলতে আমরা যা বুঝি তা অনেক ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করা সম্ভব হয়নি। তাই সুপ্রিম কোর্ট ওই আইন অনুযায়ী যে রায় দিয়েছেন তা নিয়ে আমাদের বলার কিছু নেই।’

‘তবে আমি বলে যাচ্ছি, এই আইনের বিচার কতটা সঠিক হয়েছে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অবশ্যই তার বিচার করবে। তখন হয়তো দেখা যাবে, এই বিচার যে আইনে করা হয়েছে, যেভাবে করা হয়েছে তা সঠিক হয়নি। এখন যে রায় হয়েছে সেটা আমাদের মেনে নিতে হবে।’

দালাল আইনে এর আগে বিচার হওয়াদের বঙ্গবন্ধু ক্ষমা করে দিয়েছেন উল্লেখ করে খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘যখন বঙ্গবন্ধু দেখলেন দালাল আইন করে সারা বাংলাদেশকে বিভক্ত করে দেয়া হয়েছে, অযথা অনেক লোককে হয়রানি করা হয়েছে, তখন তিনি সবাইকে মাফ করে দিয়েছেন।’

বৃহস্পতিবার (৫ মে) সকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় পুনর্বিবেচনায় জামায়াত আমির মতিউর রহমান নিজামীর আবেদন খারিজ করে দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।  

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এস কে সিনহা) নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। অন্য তিন বিচারপতি হলেন— বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

এটি ছিল যুদ্ধাপরাধী নিজামীর শেষ আইনি সুযোগ। আবেদনটি খারিজ হওয়ায় তার সামনে কেবল রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ রইল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত