সিলেটটুডে ডেস্ক

০৬ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১৫:০৮

এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের এমডিকে অপসারণ

অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ নিশ্চিত হওয়ায় এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের (এনআরবিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দেওয়ান মুজিবর রহমানকে অপসারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী দুই বছর তার কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যোগদানের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

বুধবার সকালে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকটিতে পাঠানো এক নির্দেশনায় এ নির্দেশ দেওয়া হয়। বাংলাদেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে ২০১৬ সালেই এনআরবিসির ৭০১ কোটি টাকা ঋণে গুরুতর অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকটিতে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি বছরের ২০ মার্চ ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও এমডির কাছে পাঠানো পৃথক নোটিশে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, আমানতকারীদের স্বার্থে ও জনস্বার্থে এনআরবিসি ব্যাংক চালাতে ব্যর্থ হয়েছে ফরাছত আলীর নেতৃত্বাধীন পরিচালনা পর্ষদ। আর এমডি ব্যর্থ হয়েছেন ব্যাংকটিতে যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে। এমনকি তারা গুরুতর প্রতারণা ও জালিয়াতি করেছেন, যা ফৌজদারি আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয়।

এমডিকে এসব কথা জানিয়ে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৬ ধারা অনুযায়ী কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না এবং এমডিকে কেন অপসারণ করা হবে না, নোটিশে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। ৪৬ ধারা অনুযায়ী ব্যাংকের পরিচালক/এমডিকে অপসারণ করা যায়। তবে অজ্ঞাত কারণে চেয়ারম্যানকে বাঁচাতে ৪৬ ধারার বিষয়টি এড়িয়ে যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই নোটিশে ১০টি কারণ তুলে ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক। ১০ কারণের মধ্যে ৭টির সঙ্গেই কোনো না কোনোভাবে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল আহসান জড়িত। তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এ নোটিশের বিরুদ্ধে দুজনই আদালতে যান। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে রায় এলে গত ৩ মে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও এমডি নোটিশের জবাব দেন। এরপর দুই মাস পেরিয়ে গেলেও অজ্ঞাত কারণে প্রক্রিয়াটা থমকে থাকে। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রীর কাছে ব্যাংকটির একটি পক্ষ অভিযোগ করে, সব অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ার পরও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বিচারপ্রক্রিয়া আটকে রেখেছেন, যা নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। এরপর আবারও নড়েচড়ে বসে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত জুলাইতে এমডি দেওয়ান মুজিবর রহমানের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আবার প্রক্রিয়া শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ ও জবাবের প্রয়োজনীয় নথিপত্র স্থায়ী কমিটির কাছে জমা দেয় ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ। গভর্নর ফজলে কবিরের অনুমোদনের পরই স্থায়ী কমিটিতে যায় এসব নথিপত্র।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত