সিলেটটুডে ডেস্ক

২৪ আগস্ট, ২০১৯ ২৩:০৭

‘ধর্ষণের পর কান্না না থামায় বগিতেই হত্যা করি’

প্রেমের ফাঁদে ফেলে মাদ্রাসাছাত্রী আসমা বেগমকে (১৭) পঞ্চগড় থেকে ঢাকায় এনে ধর্ষণের পর হত্যার কথা স্বীকার করেছে অভিযুক্ত মারুফ হোসেন বাঁধন (১৯)।

শনিবার (২৪ আগস্ট) সকালে বাঁধনকে পঞ্চগড় থেকে গ্রেফতার করে ঢাকায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে এক পর্যায়ে সে এ স্বীকারোক্তি দেয়। জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ঢাকা রেলওয়ে থানার (কমলাপুর) উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলী আকবর বিষয়টি জানান।

গত ১৮ আগস্ট (রোববার) সকাল থেকে নিখোঁজ ছিল পঞ্চগড় সদর উপজেলার একটি গ্রামের রাজ্জাক মিয়ার মেয়ে আসমা। পরদিন ১৯ আগস্ট সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ওয়াশ ফিল্ড এলাকায় পরিত্যক্ত ট্রেনের বগির ভেতরের বাথরুম থেকে এই কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রাতে অভিযুক্ত মারুফ হোসেন বাঁধন পঞ্চগড় থানা পুলিশের কাছে নিজেকে আত্মসমর্পণ করে। আসমার সঙ্গে তার দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানায় সে।

জবানবন্দিতে বাঁধন বলেন, অষ্টম শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় আসমার সঙ্গে প্রেম। প্রেমের সম্পর্কের কারণে তাকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেসে ঢাকায় আনি। ঢাকায় এসে কমলাপুর রেলস্টেশনে নামি। নামার পর থাকার জন্য আবাসিক হোটেল খুঁজতে থাকি। কোনো আবাসিক হোটেল ভাড়া পাওয়া যায় না। এরপর কমলাপুরে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে হোটেলে খাওয়া-দাওয়া করি। একপর্যায়ে স্টেশনের ওয়াশফিল্ড এলাকায় পরিত্যক্ত ট্রেনের বগিতে নিয়ে যাই। সেখানে তাকে জোর করে ধর্ষণ করি। ধর্ষণ করার পর সে কান্নাকাটি করতে থাকে। এতে আমি ভয় পাই। তখন কী করব মাথায় আসছিল না। তাকে চুপ করতে বলি। সে চুপ না করায় তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করি। হত্যার পর আমি সেখান থেকে বের হয়ে খিলগাঁওয়ে আসি। এরপর গাবতলিতে এসে আলম পরিবহনে পঞ্চগড়ে চলে আসি।

অভিযুক্ত বাঁধনকে শনিবার সকালে পঞ্চগড় থেকে ঢাকা রেলওয়ে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে তাকে আটকের পর শুক্রবার দুপুরে রেলওয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

রেলওয়ে পুলিশ বলছে, বাঁধনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ধর্ষণের পর হত্যার কথা স্বীকার করেছে সে।

ঢাকা রেলওয়ে থানার (কমলাপুর) উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলী আকবর বলেন, বাঁধনকে প্রথমে পঞ্চগড় থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। শনিবার সকালে তাকে কমলাপুর রেলওয়ে থানা পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাঁধন হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে জানান, প্রেমের সূত্র ধরে তারা দুজন ঢাকায় আসে গত ১৯ আগস্ট ভোরে। কমলাপুরে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে হোটেলেও খাওয়া-দাওয়া করে। একপর্যায়ে ট্রেনের ভেতরে নিয়ে তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে।

উল্লেখ্য, গত ১৯ আগস্ট সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ওয়াশফিল্ড এলাকায় পরিত্যক্ত ট্রেনের বগি থেকে মাদরাসাছাত্রী আসমার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মরদেহের ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসক জানান, তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে এবং হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়।

গত ১৮ আগস্ট সকাল থেকে নিখোঁজ ছিল পঞ্চগড় সদর উপজেলার ওই মাদরাসাছাত্রী।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত