সিলেটটুডে ডেস্ক

২০ অক্টোবর, ২০১৯ ০৩:০১

গ্রেপ্তারের পর কাউন্সিলর রাজীবকে যুবলীগ থেকে বহিস্কার

ছবি: ফেসবুক

সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের অভিযোগে যুবলীগ নেতা ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গ্রেপ্তারের পর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রাজীবকে বহিষ্কার করেছে যুবলীগ। রাজীব ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে যুবলগের ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “চলমান অভিযানে যুবলীগের কেউ দুর্নীতি বা অন্য কোনো কারণে গ্রেপ্তার হলে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা ছিল আমাদের। সেই মোতাবেক রাজীবকে বহিষ্কার করা হয়েছে।”

শনিবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাড়ি থেকে কাউন্সিলর রাজীবকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেখান থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, মদ ও নগদ টাকা উদ্ধারের কথা জানিয়েছেন র‌্যাব কর্মকর্তারা।

গত মাসের মাঝামাঝিতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর যুবলীগের অনেক নেতার মতো গা ঢাকা দিয়েছিলেন রাজীব। এরপর তার খোঁজ শুরু হয় বলে র‌্যাবের মুখপাত্র সারোয়ার বিন কাশেম জানিয়েছেন।

রাজীবকে ধরতে সন্ধ্যার পর বুসন্ধরা আবাসিক এলাকার ৮ নম্বর সড়কের ৪০৪ নম্বর ভবন ঘিরে ফেলেন র‌্যাব সদস্যরা। এরপর সেখানে অভিযান চালিয়ে মধ্যরাত পেরিয়ে সোয়া ১টার দিকে রাজিবকে নিয়ে নিচে নামেন তারা।

এ সময় সারোয়ার বিন কাশেম সাংবাদিকদের বলেন, রাজিবের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের অভিযোগ পেয়েছিলেন তারা। কিছু দিন ধরে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। গত ১৩ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এক বন্ধুর এই ফ্ল্যাটে ওঠেন তিনি। ভবনের আটতলার ওই ফ্ল্যাট থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি, সাত বোতল বিদেশি মদ ও ৩৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, “ওই ফ্ল্যাটে রাজীব একাই ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা দরজায় নক করলে তিনি খুলে দেন। কোনো ঝামেলা হয়নি।”

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার ফকিরাপুল-মতিঝিল এলাকার কয়েকটি ক্রীড়া ক্লাবে র‌্যাবের অভিযানের পর অবৈধভাবে ক্যাসিনো চালানোর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এতে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে যুবলীগের ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটসহ সংগঠনটির বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। র‌্যাবের এই অভিযান শুরু হওয়ার পর ঢাকার মোহাম্মদপুরের আলোচিত আরেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে এক কোটি টাকার এফডিআর, পৌনে সাত কোটি টাকার চেক, নগদ দুই লাখ টাকা ও চার রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল উদ্ধারের কথা জানান র‌্যাব কর্মকর্তারা। তার পরে ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত ফকিরাপুল-মতিঝিল এলাকার এ কে এম মমিনুল হক সাঈদকে কাউন্সিলর পদ থেকে অপসারণ করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। অভিযান শুরুর আগেই তিনি বিদেশে গিয়েছিলেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়।

তাদের পর গ্রেপ্তার হলেন আরেক কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা রাজীব, যিনি এর আগেও একবার সংগঠন থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন। ২০১৫ সালে এক মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার জন্য মোহাম্মদপুর থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়কের পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরে তিনি যুবলীগ উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত