সিলেটটুডে ডেস্ক:

০৬ ফেব্রুয়ারি , ২০২২ ২৩:২৭

সার্চ কমিটিকে কোনো নাম দেবে না বিএনপি

নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি বিএনপির কাছ থেকে কোনো নাম পাচ্ছে না।

কমিটির প্রথম বৈঠকের পর নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে নাম চাওয়ার সিদ্ধান্ত হওয়ার পর বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা এই কথা জানান।

সার্চ কমিটি যে রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নাম চেয়েছে- এ ক্ষেত্রে দলের অবস্থান কী হবে- এমন প্রশ্নে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, ‘সার্চ কমিটি নিয়ে আমরা আগেও বলেছি। এটা নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে সরকারের নীলনকশা। তাই এ নিয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। কোনো নাম আমরা দিচ্ছি না। নাম দিলেই কী আর না দিলেই কী?’

নির্বাচন কমিশন গঠনে এবার রাষ্ট্রপতির সংলাপ বর্জন করেছে বিএনপি। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর নির্বাচন কমিশন আইন করা এবং তার আলোকে যে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে, গোটা উদ্যোগের বিরোধিতা করেছে তারা।

বিএনপির দাবি, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার। আর সেই সরকার গঠন করবে নির্বাচন কমিশন এবং সেই কমিশন নির্বাচন ব্যবস্থা করবে।

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি পূরণ না হওয়ায় ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। তবে ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে তারা দলীয় সরকারের অধীনেই অংশ নেয়।

বিএনপির অভিযোগ, সেই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। এ কারণে আবার তারা পুরোনো দাবিতে ফিরে গেছে। নির্বাচন বানচাল ও সরকার পতনে দুই দফা আন্দোলনে ব্যর্থ হলেও আবার আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তবে বিএনপির এই অবস্থানের মধ্যেও নির্বাচন কমিশন গঠনে উদ্যোগ এগিয়ে চলছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটিতে কোনো শূন্যতা থাকা চলবে না। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নতুন কমিশন গঠনে চলছে তোড়জোড়।

এর মধ্যে বিকেলে প্রথম বৈঠকে বসে নির্বাচন কমিশনার খুঁজে বের করতে গঠন করা সার্চ কমিটির প্রথম বৈঠক।

বৈঠক শেষে কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব পালন করা মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেসব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল আছে, তাদের কাছ থেকে নাম চাইব- তাদের কোনো চয়েজ আছে কি না, প্রপোজাল আছে কি না সেটা। ই-মেইল বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও সংশ্লিষ্টরা তা দিতে পারবে। ব্যক্তিগতভাবে কেউ দিতে চাইলে তা-ও দিতে পারবে।’

মঙ্গলবার, আগামী শনিবার দুটি এবং রোববার আবার বৈঠক হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সিভিল সোসাইটি ও মিডিয়ার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ যারা আছেন তাদের নিয়ে কমিটি মিটিংয়ে বসবে। তাদের কোনো প্রস্তাব বা সাজেশন থাকলে তা নেয়া হবে। সবার বক্তব্য এবং আইনে যেভাবে বলা আছে, সেসব বিবেচনা করে আইন অনুযায়ী সিলেকশন করে ১০ জনের নাম দেয়া হবে।’

যে সার্চ কমিটি গঠন হয়েছে, সেটি একপেশে বলে মনে করেন বিএনপি নেতারা। কমিটির প্রথম বৈঠকের দিন সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির মুখপাত্র ও দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘এটি সার্চ কমিটি না, আওয়ামী খাস কমিটি।’

তিনি বলেন, ‘অনুসন্ধান কমিটির দ্বারা মনোনীত নির্বাচন কমিশন হয়ে একান্তভাবে সরকারের আস্থাভাজন। এগুলো দিয়ে জনগণের সঙ্গে নাটক, প্রহসন, প্রতারণা, রংতামাশা চলছে।’

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘আমরা এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাব না। কাজেই সার্চ কমিটির ব্যাপারে আমাদের কোনো চিন্তাভাবনা নেই।’

দলটির নীতিনির্ধারণী সর্বোচ্চ পর্ষদের আরেক নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন অবশ্য ব্যক্তিগতভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের দলের মহাসচিব কথা বলবেন। তিনি দলের মুখপাত্র। আমি কোনো মন্তব্য করব না।’

সার্চ কমিটি গঠন করে এর আগে দুটি নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। একটি কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে, একটি বর্তমান নির্বাচন কমিশন, যেটি করা হয়েছে কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে।

রকিব কমিশন পরিচালনা করেছে দশম সংসদ নির্বাচন, যেটিতে বিএনপি অংশ নেয়নি আর নুরুল হুদার নেতৃত্বে কমিশন পরিচালনা করেছে একাদশ সংসদ নির্বাচনে, যেটিতে বিএনপি ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে ফল করেছে।

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, এই দুটি নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। এমনকি গত সংসদ নির্বাচনে আগের রাতেই বাক্স ভরাট করে ফেলার অভিযোগ এনেছেন দলটির নেতারা।

সিইসি কে এম নুরুল হুদা এই অভিযোগকে কথার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, কেউ তো এই অভিযোগ নিয়ে আদালতে মামলা করেনি। আর তিনি রাতে ভোট হতে দেখেননি।

খবর: নিউজবাংলার

আপনার মন্তব্য

আলোচিত