সিলেটটুডে ডেস্ক

২৫ মার্চ, ২০২২ ১৮:২৭

সাড়ে ৩ বছরের তারেক রহমানের ‘মুক্তিযুদ্ধে অবদানকে স্মরণ’ ফখরুলের

বেগম খালেদা জিয়াকে ‘প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা’ উল্লেখ করে একাত্তরে সাড়ে তিন বছর বয়েসী তারেক রহমানের ‘অবদানের’ কথা স্মরণ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে বন্দি থাকা তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর ‘মুক্তিযুদ্ধে অবদানকে অস্বীকার করার উপায় নেই’ বলে দাবি করেছেন।

শুক্রবার সকালে গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এই দাবি করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দলের নেতা তারেক রহমান সাহেবও ওই সময়ে কিন্তু তার ছোট ভাইসহ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বন্দি ছিলেন। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধের ওই সময়ে ছোট মানুষটির অবদানও কারও অস্বীকার করার উপায় নেই।’

উল্লেখ্য, তারেক রহমানের জন্ম ১৯৬৭ সালের ২০ নভেম্বর। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে তার বয়স ছিল সাড়ে তিন বছরের কম।

বেগম জিয়া মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে অষ্টম রেজিমেন্টের সৈন্যদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন এমন দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘যে নেত্রী একজন গৃহবধূ ছিলেন। জিয়াউর রহমান সাহেব সেদিন যখন সোয়াত জাহাজের দিকে এগোচ্ছিলেন, তখন পাকিস্তানি কমান্ডার আমাদের অষ্টম বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডার সোহরাব হোসেন সেনাবাহিনীর সৈনিকদের নিরস্ত্র করার চেষ্টা করছিলেন। সেই সময়ে কিন্তু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রথম বলেছিলেন, ‘তোমরা অস্ত্র সমর্পণ করবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না জিয়াউর রহমান ফিরে আসেন। এই দিয়ে তার শুরু।’

মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের সেনানিবাসে দুই পুত্রকে নিয়ে অবস্থান করা খালেদা জিয়ার মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকা নিয়ে বিএনপি কখনও গর্বভরে কিছু বলেছে এমন নয়, বরং রাজনীতিতে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের এ বিষয়ে নানা সময় কটাক্ষকর বক্তব্যেও বিএনপি কোনো জবাব দেয়নি। তবে গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তিতে বিএনপি হঠাৎ করেই বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবি করে। এ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নানা কটাক্ষের পর বিএনপি নেতারা কয়েক মাস এ নিয়ে আর কিছু বলেননি। এবার স্বাধীনতা দিবস সামনে রেখে আবার এই কথাগুলো তুলেছেন ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি সব সময় বলার চেষ্টা করেছি আপনাদের যে, দেশে প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা কেউ যদি থাকে তিনি হচ্ছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাকে (খালেদা জিয়া) আজকে মিথ্যা মামলায় বন্দি করে রাখা হয়েছে। ৪০ বছর ধরে যিনি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করলেন তাকে আজ এই সরকার আটক করে রেখেছে। অসুস্থাবস্থায় তাকে চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না তারা।’

বিএনপি মহাসচিবের দাবি, যে লক্ষ্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, সেটিই এখন হুমকির মুখোমুখি। তিনি বলেন, ‘আমরা চতুর্দিক থেকে জাতিগতভাবে খুব বিপজ্জনক অবস্থায় পড়ে আছি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের যে লক্ষ্য ছিল একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করা, সেটাই আজ সবচেয়ে বিপদের সম্মুখীন হয়েছে।

‘দেশে গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। সারা বিশ্বে আমরা চিহ্নিত হয়েছি মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী একটা দেশ হিসেবে।’

ফখরুল বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটা চরমভাবে.. এটাকে বলা হয় যে, বার্জিং মানে রাজনীতিকে নির্মূল করে দেয়া, বিএনপিকে নির্মূল করে দেয়ার চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করছে তারা (সরকার)।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও সদস্য সচিব আবদুস সালাম উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত