নরসিংদীতে ছাত্রদলের দুই নেতা হত্যা মামলার আসামি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রদলের বহিষ্কৃত ও পদবঞ্চিতরা।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের কোর্ট রোড এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় তিনিটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

হামলায় গাড়িতে থাকা আট সহকর্মী ও সহকারী আহত হয়েছেন বলে দাবি খায়রুল কবীর খোকনের আইনজীবী ইলতুতমিশ সওদাগরের। এ সময় দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের সহযোগিতা চেয়েও পাননি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

গত ২৬ জানুয়ারি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদকে সভাপতি ও মেহেদী হাসান রিফাতকে সাধারণ সম্পাদক করে ঘোষিত নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের আংশিক কমিটি বাতিল ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের দিয়ে কমিটি গঠনের দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভ করে আসছিলেন ছাত্রদলের পদবঞ্চিতরা। পরে গত ২৫ মে বিক্ষোভের সময় নিহত হন ছাত্রদলের দুই নেতা সাদেকুর রহমান ও আশরাফুল ইসলাম।

এ ঘটনায় নিহত সাদেকুর রহমানের ভাই আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনকে প্রধান আসামি করে নরসিংদী মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় খোকনের স্ত্রী শিরিন সুলতানাসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩৫-৪০ জনকে আসামি করা হয়।

বৃহস্পতিবার খাইরুল কবির খোকনসহ অন্যান্য আসামিরা আদালতে হাজিরা দিতে আসবেন, এমন সংবাদে পদবঞ্চিত ছাত্রদলের নেতারা লাঠি হাতে ও গায়ে কাফনের কাপড় জড়িয়ে কোর্ট রোড এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। তারা খোকনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এক পর্যায়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খোকনের পক্ষের আইনজীবীদের বহনকারী দুটি মাইক্রোবাস ভাঙচুর করেন বিক্ষোভকারীরা। এর আধা ঘন্টা পরে আরও একটি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করা হয়। এ সময় গাড়িগুলোতে থাকা অন্তত আটজন আইনজীবী ও তাদের সহকারী আহত হন বলে দাবি করেন খোকনের আইনজীবী ইলতুতমিশ সওদাগর। তবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি।

ইলতুতমিশ সওদাগর বলেন, ‘আমরা জেলখানা মোড় থেকে আদালত প্রাঙ্গণে যাচ্ছিলাম কোর্ট রোডের স্টেডিয়াম সংলগ্ন স্থানে পৌঁছলে একদল দুষ্কৃতকারী হামলা চালিয়ে আমাদের বহনকারী গাড়ি ভাংচুর শুরু করে। এ সময় পরপর তিনটি গাড়ি ভাংচুর করা হয়। এতে আইনজীবীসহ আট জন আহত হয়েছেন। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের সহযোগিতা চেয়েও পাওয়া যায়নি।’

জানতে চাইলে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) একেএম শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘হত্যা মামলার আসামি বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকনের আদালতে হাজির হওয়ার বিষয়টি পুলিশ অবগত ছিল। সেজন্য আদালতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সড়কে গাড়ি ভাংচুরের বিষয়ে পুলিশের কাছে কোন অভিযোগ আসেনি। তবে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

ছাত্রদলের পদবঞ্চিত গ্রুপের নেতা মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘যতদিন ছাত্রদল নেতা সাদেক ভাই ও আশরাফুল হত্যার বিচার না হবে ততোদিন খাইরুল কবির খোকনকে নরসিংদীতে ঢুকতে দেব না। ইতিমধ্যে তাকে জেলায় অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছি। পাশাপাশি জেলা ছাত্রদলের বর্তমান কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি বিএনপি'র কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দর কাছে।’