সিলেটটুডে ডেস্ক

১৯ জানুয়ারি, ২০১৬ ২১:৪৭

রওশনপন্থি বাবলুকে মহাসচিব পদ থেকে সরিয়ে দিলেন এরশাদ

জাতীয় পার্টির মধ্যকার চলমান গৃহদাহ এবং পদবন্টন নিয়ে সৃষ্ট ঝামেলার পালে নতুন হাওয়া লাগিয়ে রওশনপন্থি নেতা জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে মহাসচিব পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে সেখানে রুহুল আমিন হাওলাদারকে ফিরিয়ে এনেছেন এরশাদ। বাবলু প্রায় পৌনে দুই বছর মহাসচিব পদে ছিলেন।

মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে বনানীতে নিজ কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ বলেন, ‘এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ১৪ বছর দলে মহাসচিব ছিলেন এবং সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু তাকে আমি সরিয়ে দিয়ে জিয়াউদ্দিন বাবলুকে মহাসচিব করেছি এবং ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করেছিলাম। তখন কেউ প্রশ্ন তোলেনি। আমি দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এটা করেছি। জিয়াউদ্দিন বাবলু দু’বছর মহাসচিবের দায়িত্ব পেলেও তিনি একটি বর্ধিত সভা ও একটি প্রেসিডিয়াম সভাও ডাকতে পারেননি। তাই আমি বাবলুকে দলের মহাসচিব পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে দলের সাবেক সফল মহাসচিব রুহুলকে করলাম।’

এরশাদ বলেন, ‘জাপা বিভিন্ন প্রয়োজনে মহাসচিবদের দায়িত্ব দিয়েছে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও করেছে। পার্টির স্বার্থেই এগুলো করেছি। তার ধারাবাহিকতায় জিএম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যান করেছি। এই সিদ্ধান্তকে একটি চক্র মেনে নিতে পারেনি। এই চক্রে আছে বাবলু ও আরেকজন। এদের সাথে দশজন লোকও নেই।’

রওশন এরশাদকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রওশদ এরশাদ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হননি। হতে পারে না। এগুলো রওশনের বক্তব্য না। বাবলু ঘোষণা দেয়ার কে? আমাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। উনি বিরোধী দলীয় নেত্রী। উনি সংসদে পার্টির ভূমিকা পালন করেন। আমি দল পরিচালনা করি।’

গত রোববার রংপুরে এরশাদ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও তার ছোটভাই জিএম কাদেরকে দলের কো-চেয়ারম্যান এবং উত্তরসূরি ঘোষণা করেন। এদিকে ঢাকায় পার্টির সরকার সমর্থক সাংসদ ও সভাপতিমণ্ডলীর নেতাদের একাংশের ‘যৌথ সভা’ থেকে এরশাদের সিদ্ধান্তকে ‘গঠনতন্ত্রবহির্ভূত’ ঘোষণা হয়। সেইসঙ্গে এরশাদের স্ত্রী বিরোধী দলীয় নেতা রওশনকে দলের ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান’ করা হয়েছে বলে জানান পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নিলেন এরশাদ।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠায় বিতর্কে পড়েন এবিএম রুহুল আমিন। এরপর তাকে হটিয়ে ওই বছর ১০ এপ্রিল রাতে পার্টির চেয়ারম্যান গঠনতন্ত্রের ৩৯ ধারা মোতাবেক রুহুল আমিন হাওলাদারের জায়গায় জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে মহাসচিব নিয়োগ দেন।

জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ১৯৮১-৮২ সেশনে জাসদ ছাত্রলীগ প্যানেল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) জিএস নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এরশাদ দেশের শাসন ক্ষমতায় আবির্ভূত হলে বাবলু জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত