নিউজ ডেস্ক

০২ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:৪০

নির্দেশ এরশাদেরই

৫ জানুয়ারির নির্বাচনে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের নির্দেশেই অংশগ্রহণ জাতীয় পার্টির



জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের নির্দেশেই ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন রওশন এরশাদ।  


বৃহস্পতিবার (১ জানুয়ারি) জাতীয় পার্টির ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত মহাসমাবেশে এ গুমর ফাঁস করেন তিনি।


অথচ ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ প্রশ্নে ধোয়াসা রয়েছে। ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। জাপা চেয়ারম্যানের সেই ঘোষণা নিয়ে অনেকের মনে সংশয় ছিলো।


কিন্তু মহাসমাবেশে এরশাদের উপস্থিতিতেই রওশন বলেন পার্টির চেয়ারম্যানের নির্দেশে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। এ নিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে কানা-কানি করতে দেখা গেছে।


তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৪ বার নির্বাচন হয়েছে। যার প্রতিটিতে জাতীয় পার্টিকে বাইরে রাখার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তারপরও আমি নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। এমনকি গত নির্বাচনেও চেয়ারম্যানের নির্দেশে নেতাকর্মীদের পরামর্শে আমি অংশ নিয়েছিলাম। 


তিনি আরও বলেন, সাংবিধানিক প্রক্রিয়া সমুন্নিত রাখতে গত নির্বাচন করেছিলাম। বিএনপি যদি সেই নির্বাচনে অংশ নিত তবে তারাই হয়তো সরকার গঠন করতে পারতো। তারা যেহেতু নির্বাচনে অংশ নেয়নি, তাই পরবর্তী নির্বাচনের জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হবে।


রওশন বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশ অস্থিতিশীল করে তুললে হবে না। এতে সাধারণ মানুষের ক্ষতি বেশি হয়। আমরা কাকে মারব। বিএনপি-জামায়াত সকলেই তো আমাদের ভাই।


প্রতিটি নির্বাচনের পরে পরাজিত পক্ষ অভিযোগ তোলেন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। যে কারণে জনগণ আর রাজনীতিবিদদের বিশ্বাস করছে না। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে বলেও জানান তিনি।


নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে সংসদে কথা বলতে পারছে জাতীয় পার্টি। এই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান রওশন এরশাদ।


বিরোধী দলীয় এই নেতা বলেন, বিভিন্ন সময় জাতীয় পার্টিতে বিভক্ত দেখা দিয়েছে। এতে পার্টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগামীতে নির্বাচনের মাধ্যমে দলকে ক্ষমতায় আনতে দলের এসব বিভক্তি নিরসন করা হবে।


রওশন বলেন, অনেকে অভিমান করে দল থেকে সরে গেছে। তাদের আবার দলে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।


এসময় তিনি জাতীয় পার্টির সাবেক নেতাদের অভিমান ভুলে দলে ফিরে আসার আহ্বান জানান।


ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা করতে হবে। জাতীয় পার্টির জনপ্রিয়তা রয়েছে। কিন্তু  তারপরও কেন ২৪ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকলাম? ভুল কোথায় তা চিহ্নিত করে সমাধান করতে হবে বলেও জানান রওশন।


তিনি বলেন, যারা পার্টির চেয়ারম্যান ও আমাকে জেল থেকে মুক্ত করার জন্য আন্দোলন করেছেন নির্যাতন সহ্য করেছেন তাদের সেই সহযোগিতা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি।


প্রয়াত মিজানুর রহমান চৌধুরীসহ জেপি চেয়ারম্যান বন ও পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদসহ অনেকের নাম উল্লেখ করে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।


রওশন এরশাদ বলেন, তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি প্লাটফর্ম তৈরি করতে হবে। এর সঙ্গে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। জনগণকে সম্পৃক্ত করতে না পারলে দল এগিয়ে যেতে পারবে না।


পার্টিতে শিক্ষিত, সচেতন ও ভালো মহিলাদের প্রয়োজন রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।


দারিদ্র্য থেকে সন্ত্রাসের সৃষ্টি হয় মন্তব্য করে এর বিরুদ্ধে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান রওশন এরশাদ। 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত