১৫ মে, ২০১৬ ১৫:০৫
ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির এক নেতার সঙ্গে বৈঠক করে আলোচিত বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার। বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিবকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (১৫ মে) চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার একথা জানান।
তিনি বলেন, “বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যখনই তাকে পাওয়া যাবে তখনই গ্রেপ্তার করা হবে।”
সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি পত্রিকায় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে ভারতে ইসরায়েলের লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি এন সাফাদির সেই সাক্ষাতের খবর ও ছবি প্রকাশিত হয়। দিল্লিতে ডেল-আভিভ শীর্ষক ওই সম্মেলন এবং মেন্দি এন সাফাদি সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেসি অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনসের ফেইসবুক পেইজেও দেখা যায় তাদের একাধিক ছবি।
আসলাম চৌধুরী ইতোমধ্যে তার দিল্লি সফর ও ওই ছবির সত্যতা স্বীকার করেছেন বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। একাধিক পত্রিকা ও টেলিভিশনকে তিনি বলেছেন, তিনি তখন জানতেন না যে মেন্দি এন সাফাদি ইসরায়েলের লিকুদ পার্টির নেতা। আর ওই সফর ছিল তার ব্যক্তিগত, দলীয় বিষয় নয়।
তবে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারকে উৎখাতের ‘ষড়যন্ত্রের’ লক্ষ্যে ওই বৈঠক হয়েছিল অভিযোগ করে আসলাম চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তার চেয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যে শুক্রবার চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, বিএনপির কোনো নেতার সঙ্গে ‘মোসাদ কানেকশান’ আছে কি না সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির যোগাযোগ তাদের জন্য ‘রাজনৈতিক আত্মহত্যা’ হবে বলে মন্তব্য করেছেন ফিলিস্তিন দূতাবাসের শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ইউসুফ এস রামাদান। এ বিষয়ে বিএনপি নেতাদের সতর্ক করার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। এই দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্কও নেই।
আসলামের বিষয়ে খবর প্রকাশের পর মির্জা ফখরুল ফিলিস্তিন দূতাবাসে গিয়েছিলেন বলে জানান রামাদান।
শনিবার দূতাবাসে এক অনুষ্ঠানে তিনি জানান, মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির দুজন নেতা তাকে বলেছেন মোসাদের সঙ্গে তাদের দলের কোনো সম্পর্ক নেই এবং ওই ‘গোপন বৈঠকের’ বিষয়ে তারা কিছু জানেন না।
বিএনপি মহাসচিব সংবাদ সম্মেলন করেও মোসাদের সঙ্গে ‘ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ নাকচ করেছেন। আসলাম চৌধুরী ব্যক্তিগত সফরে ভারত গিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরীর ফিলিং স্টেশন, আবাসন ও জাহাজ ভাঙার ব্যবসা রয়েছে। ২০০৮ সালে প্রথমবার নিজের এলাকা সীতাকুণ্ড থেকে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। এবারই প্রথম বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে এসে যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, ইসরাইলের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক কোন সম্পর্ক নেই।
আপনার মন্তব্য