রাইআন কাব্য

০৭ জানুয়ারি, ২০১৫ ১৪:১৬

অবরোধ ‘স্থগিত’ হচ্ছে!

নানামূখি চাপ এবং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে অবরোধ ‘স্থগিত’ করতে যাচ্ছে বিএনপি নেতৃত্বাধিন বিশ দলীয় জোট। বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে এর বাইরে যাওয়ার আর কোন পথ বাকি ছিল না বিএনপির।



৯ জানুয়ারি টঙ্গীর তুরাগ তীরে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করা হবে বলে এক সূত্র নিশ্চিত করেছে। মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়। এদিকে তাবলিগ জামায়াতের তিন সদস্যের এক প্রতিনিধি দল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার পর অবরোধ স্থগিতের এক পরোক্ষ চাপে ভুগছেন তিনি। যদিও এই প্রতিনিধি দল সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানান তারা অসুস্থ বেগম জিয়াকে দেখতে এবং বিশ্ব ইজতেমার দাওয়াত দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু এর আগে এমন কোন উদাহরণ ছিল না।



বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করার বিষয়ে দলের মধ্যে চাপের মধ্যে রয়েছেন বেগম জিয়া। গাজীপুর জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ ইতোমধ্যেই মিডিয়ার মাধ্যমে দলের হাইকমাণ্ডের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। তাছাড়া মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম সম্মিলনের সময়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে বিএনপি কোনক্রমেই চাইবে না মুসল্লিদের বিরাগভাজন হোক। গত বছর বাংলাদেশসহ ১৩৫টি দেশের প্রতিনিধিরা বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিয়েছিলেন।



এদিকে ব্যারিস্টার তুহিন মালিকের বিশ্ব ইজতেমা বিষয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন এই অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগ সাইট সরগরম রয়েছে। অভিযোগে জানা যায় তুহিন মালিক বিশ্ব ইজতেমাকে ‘পিকনিক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং কথিত পিকনিক উপলক্ষে তিনি অবরোধ কর্মসূচি বন্ধ না করার পক্ষে অভিমত দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তুহিন মালিকের সাথে ফেসবুক ইনবক্সে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কোন প্রত্যুত্তর করেননি।



তিন দিনব্যাপি বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্যায় উপলক্ষে অবরোধ স্থগিত করা হলেও আগামি সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকে এই কর্মসূচি আবারও শুরু হতে পারে। তাছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গ্রেফতারের পর ঠাকুরগাঁওসহ রংপুর বিভাগে হরতাল পালিত হচ্ছে। সিলেটে বৃহস্পতিবার হরতাল ডেকেছে স্থানীয় বিএনপি এবং নাটোরে হরতাল পালন করেছে বিএনপিসহ সমমনারা। এই পরিস্থিতিতে নতুন কর্মসূচি দেওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও আবারও বাঁধ সেধেছে বিশ্ব ইজতেমা।



এদিকে বিশ্ব ইজতেমাকে নিয়ে রাজনীতিও শুরু করেছে আওয়ামিলীগ নেতারা। মোফাজ্জ্বল হোসেন চৌধুরী মায়া এ প্রসঙ্গে বলেন- বিশ্ব ইজতেমায় যাতে মুসল্লিরা অংশ নিতে না পারে সে জন্যে বিএনপি অবরোধ দিয়ে রেখেছে। তবে আল্লাহর ইচ্ছায় লাখ লাখ মানুষ অবরোধ ভঙ্গ করে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেবে।



বেগম খালেদা জিয়াকে ‘অবরুদ্ধ’ করে রাখা, মির্জা ফখরুলের গ্রেফতার, মধ্যবর্তি নির্বাচনের দাবি এবং সারাদেশে দলীয় নেতাকর্মিদের ওপর তীব্র দমননীতির বিরুদ্ধে আগামি সপ্তাহ থেকে নতুন কর্মসূচি আসার সম্ভাবনা থাকলেও বিএনপি সন্দিহান আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নিয়ে। কারণ খোদ ৫ জানুয়ারি বিএনপিসহ বিশ দলীয় জোটের নেতাকর্মিদের মাঠে দেখা যায় নি বিক্ষিপ্ত কিছু কর্মসূচি ছাড়া।



এ পরিস্থিতিতে কোন পথে যাবে বিএনপিসহ বিশ দলীয় জোট? অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পেলে জোটভুক্ত দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে তবে নির্ধারিত হতে পারে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি। 



আপনার মন্তব্য

আলোচিত