সিলেটটুডে ডেস্ক

০৮ ফেব্রুয়ারি , ২০১৭ ০০:৫৩

ইসি নিয়ে আমরা হতাশ ও নিরাশ : ফখরুল

নবগঠিত নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়ে ২০-দলীয় জোট হতাশ বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তারা মনে করছে বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রধানমন্ত্রীই পছন্দের প্রতিফলন ঘটেছে।

নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) বিতর্কিত ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, একজন বিতর্কিত সাবেক সরকারি কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠিত কোন প্রতিষ্ঠান নির্মোহভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। কাজেই কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্ব সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব হবে না।

মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নবনিযুক্ত ইসি নিয়ে ২০-দলীয় জোটের পক্ষ থেকে মির্জা ফখরুল এক প্রতিক্রিয়া এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, শেষ মুহূর্তে ইসি গঠনে যে রুদ্ধশ্বাস দ্রুততার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা অনেকের মনেই সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। এর মধ্যে একটি বড় সন্দেহ হল— কাদেরকে নির্বাচন কমিশনে রাখা হবে, সেটি ছিল শাসক মহলের পূর্ব পরিকল্পিত। এতে ২০ দলীয় জোট হতাশ ও নিরাশ।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এবারের নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়টি বিএনপি শুরু থেকেই অত্যন্ত গুরুত্ব ও গভীর আন্তরিকতার সঙ্গে নিয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম যাদেরকে নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে তারা হবেন সৎ, দল-নিরপেক্ষ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। কিন্তু সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দিনের শেষ মুহূর্তে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত ১০ নাম থেকে একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার জনকে নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সব মহল থেকে দাবি ছিল, সার্চ কমিটি কর্তৃক বাছাইকৃত ১০ জনের নাম জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে। এবং তাদের জীবনবৃত্তান্ত ও কর্মঅভিজ্ঞতা সম্পর্কে সবাইকে তথ্য সরবরাহ করা হবে। এ পন্থা অনুসরণ করা হলে প্রক্রিয়াটি কিছুটা হলেও স্বচ্ছতা পেতো। কিন্তু তা করা হয়নি। এর ফলে আমরা নিরাশ ও হতাশ হয়েছি।’

‘রাষ্ট্রপতি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেই সিদ্ধান্তই আমরা মেনে নেবো’— প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসলে প্রধানমন্ত্রী জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছেন। সাংবিধানিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী দুটো বিষয় ছাড়া (প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ) অন্য সব বিষয়ে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ গ্রহণ করতে বাধ্য। সঙ্গত কারণেই আমরা মনে করতে পারি, নতুন ইসি গঠনে প্রধানমন্ত্রীর পছন্দেরই প্রতিফলন ঘটেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, ১৯৯৬ সালে নুরুল হুদা কুমিল্লা জেলা প্রশাসক হিসেবে বিএনপি সরকারবিরোধী জনতার মঞ্চের একজন সংগঠক ছিলেন।

একটি নির্বাচন কমিশনের যাত্রার শুরুতেই আস্থার সংকট ভবিষ্যতে বড় ধরনের সমস্যার জন্ম দিতে পারে, মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সাবেক সচিব কে এম নুরুল হুদা নেতৃত্বাধীন এই কমিশনে সদস‌্য হিসেবে আছেন সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ কবিতা খানম ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী।

সার্চ কমিটির ১০টি নামের সুপারিশ থেকে সোমবার এই পাঁচজনকেই সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) নতুন ইসির জন্য নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

সোমবার নিয়োগ পাওয়া কে এম নুরুল হুদা হবেন বাংলাদেশের দ্বাদশ সিইসি। আর নতুন চার নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে কমিশনার হবেন মোট ২৭ জন। নবগঠিত নির্বাচন কমিশন আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি শপথ গ্রহণ করবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত