সিলেটটুডে ডেস্ক

২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০৪:১৬

রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো না গেলে বাংলাদেশের বিপদ: গয়েশ্বর

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো না গেলে ভবিষ্যতে তা বাংলাদেশের ভেতরেই বিপদের কারণ হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিলের উদ্যোগে ‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থা ও নেতৃবৃন্দের ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় বক্তব্যে গয়েশ্বর বলেন, “রোহিঙ্গাদের স্থায়ী সমাধান অর্থাৎ তাদের নিজ জন্মভূমিতে ফেরত যাওয়ার ব্যবস্থা আমাদের করতে হবে। তা নাহলে এই সমস্যাটা বাংলাদেশের জন্য একসময় স্থায়ী হবে এবং এই সমস্যাকে কেন্দ্র করে দেশে রাজনীতিতে নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে।”

বিএনপি নেতা বলেন, “যেসব বৃহত্তর শক্তি মিয়ানমারের পেছনে কাজ করছে, অস্ত্র দিচ্ছে শক্তি দিচ্ছে, তারাই বলপূর্বক এই রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশে আনছে। বাংলাদেশে যে আনছে, এখানে যে শেষ হবে, তা নয়।

“ওই সব বৃহত্তর শক্তিগুলো পর্দার অন্তরালে থেকে মিয়ানমারকে যেভাবে আজকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে। আপনারা বিশ্বাস রাখেন যে আজকে আমাদের দেশে যারা অনুপ্রবেশ করেছে বা যাদেরকে আমরা স্থান দিচ্ছি, এক সময় তাদের কাছেও ওই অস্ত্র আসবে।

“এক সময় এটা একটা মরণপণ যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধটা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে হবে না। আমাদেরকে হুমকির সম্মুখীন হতে হবে। কারণ পৃথিবীজুড়ে অস্ত্র ব্যবসায়ী যারা, তাদের কাজটাই হলো নানা পক্ষের মধ্যে ঝগড়া লাগানো।”

এই পরিস্থিতিতে সবাইকে সতর্ক থাকার তাগিদ গয়েশ্বর বলেন, “আন্তর্জাতিক অনেক সন্ত্রাসী গ্রুপ অথবা অনেক দেশ আছে, যারা আমাদেরকে দুর্বল রাখার জন্য তারা বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠির অথবা আগত রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে আগামী দিনে স্থায়ী অস্থিতিশীল অবস্থা গড়ে তুলতে পারে।”

দক্ষিণ এশিয়া এবং বঙ্গোপসাগরে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার দৌড়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পাশাপাশি ভারতও রয়েছে বলে মন্তব্য করেন গয়েশ্বর।

“এই তিন পরাশক্তি একজন আরেকজনকে সহ্য করতে পারছে না। এই বঙ্গোপসাগর ব্যবহার করার আশ্বাস এই সরকার অনেককে দিয়েছিল, শেষ পর্যন্ত কাউকে দিতে পারছে না। এই না দিতে পারার কারণেও আড়ালে এখানে রোহিঙ্গা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে কি না, সেটাও আমাদের ভাবনার বিষয়।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে গয়েশ্বর বলেন, “আজকে প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে গেলেন, উনি বললেন আমেরিকার সাহায্যের দরকার নাই। অর্থাৎ উনি কোথাও স্থান পাচ্ছেন না। চীনের সাথে একটা ভালো সম্পর্ক করার চেষ্টা করলেন, রাশিয়ার সাথে পুরনো সম্পর্ক।

“আমাদের এখানে এত বড় (পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প) রাশিয়াকে দেওয়া হয়েছে, আজকে রাশিয়ার ভূমিকা যদি চীনের পক্ষে হয়, আর চীনের ভূমিকা যদি পর্দার অন্তরালে মিয়ানমারের পক্ষে হয়, তাহলে আমাদের এই ভুখণ্ড ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে কত কাড়াকাড়ি!”

“একদিন যদি চীন পর্দার অন্তরালে খেলে। দেখলাম ভারত থেকে নরেন্দ্র মোদী প্রকাশ্যে গিয়ে বললেন, আমি আছি। অর্থাৎ আজকে বাংলাদেশের প্রশ্নে, রোহিঙ্গাদের প্রশ্নে ভারত, চীন, রাশিয়া কারও ভূমিকা ইতিবাচক নয়, সবাই নেতিবাচক।”

রোহিঙ্গাদের `অবর্ণনীয় দুর্ভোগ’ লাঘবে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে দলমত নির্বিশেষে ‘একসুরে’ কথা বলতে ‘জাতীয় ঐক্য’ সৃষ্টির আহ্বান জানান বিএনপি নেতা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত