নিউজ ডেস্ক

২০ জানুয়ারি, ২০১৫ ০৩:০৯

অবরোধে অনঢ় খালেদা, জিরো টলারেন্সে সরকার

অবরোধ কর্মসূচিতে অনঢ় থাকার ঘোষণা দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া বললেন অবরোধ চলছে, অবরোধ চলবে। তিনি অফিস না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েও বললেন- এটা আমার অফিস, এখানে আমার কাজ আছে, আমি কাজ করব। এদিকে অবরোধ চলাকালীন সময়ে নাশকতাকারিদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করতে যাচ্ছে সরকার। নাশকতাকারিদের কাউকেই ছাড় দেবে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী।


১৬ দিন অবরুদ্ধ থাকার পর সব ধরণের বিধিনিষেধ তুলে দেওয়ার ১৬ ঘন্টা পর বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিশ দলীয় জোট নেত্রি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। 

নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে সংলাপে সরকারের সাড়া না পেয়ে অবরোধ অব্যাহত রাখার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে অন্য কোনো কর্মসূচির চিন্তা তার নেই।রাজনৈতিক সঙ্কটের সমাধান সংলাপের মধ্য দিয়ে করার আহ্বান জানিয়ে খালেদা বলেন, “বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগ জানিয়েছে। আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগের প্রতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

দশম সংসদ নির্বাচনের বছরপূর্তির দিন গত ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা ও কালো দিবস’র  কর্মসূচি পালনে কার্যালয় থেকে বের হতে বাধা পেয়ে লাগাতার অবরোধ ডাকেন ২০ দলীয় নেত্রী খালেদা। বিক্ষিপ্তভাবে গাড়ি পোড়ানো, বোমাবাজি ও ভাংচুরের মধ্যে চলা অবরোধে অগ্নিদগ্ধ হয়ে অন্তত ২০ জন সাধারণ মানুষ ইতোমধ্যে নিহত হয়েছেন।

এসব ঘটনার জন্য সরকার বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটকে দায়ী করে কঠোর হওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেও খালেদা এজন্য ক্ষমতাসীন দলকেই দায়ী করেন।  এদিকে যখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী যখন নাশকতাকারিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছিল তখন বিএনপিই তাদের ভাষায় ‘সরকারি এজেন্ট’দের বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহারের বিরোধিতা করে বিবৃতি দিয়েছিল।

এরপর তার কার্যালয়ে তালা দিয়ে ভবন ঘিরে পুলিশের অবস্থানের পাশাপাশি সড়কে ১১টি বালুর ট্রাক রেখে দেওয়া হয়। গুলশান ২ নম্বর সেকশনের ৮৬ নম্বর সড়কে যান ও মানুষের চলাচলও আটকে দেয় পুলিশ। এর মধ্যে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারও দেখা করতে হলে পুলিশের অনুমতি নিতে হত। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, নিরাপত্তার ‘স্বার্থে’ এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এদিকে খালেদা জিয়া অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার প্রেক্ষিতে সরকারের উচ্চ মহল জিরো টলারেন্স নীতিতে  এগুচ্ছে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীকে জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

অবরোধে নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে 'জিরো টলারেন্স' নীতি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জনজীবনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব পদক্ষেপ নিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। বৈঠকের একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এছাড়াও বোমাবাজ ও নাশকতাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিতে আরও কঠোর অভিযানে নামছে যৌথ বাহিনী।

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে সভায় স্বরাষ্ট্র সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান, পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র জানায়, বৈঠকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের ডাকা অবরোধ ও হরতাল নিয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনা হয়। আন্দোলনের নামে সহিংসতা ও নাশকতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সবাই মতামত দেন। সারাদেশে চলমান যৌথ বাহিনীর অভিযান আরও বেগবান করে জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসছে বলে বৈঠকে উপস্থিত অনেকেই মত দেন।


আপনার মন্তব্য

আলোচিত