স্পোর্টস ডেস্ক

৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১১:৫৫

বেনফিকায় বিধ্বস্ত বার্সেলোনা

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এবারের আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ঘরের মাঠে রীতিমতো উড়ে গিয়েছিল বার্সেলোনা। সে দুঃস্মৃতি ভুলে বেনফিকার মাঠে ভালো কিছু করার প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নেমেছিল দলটি। কিন্তু ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি। পর্তুগিজ দলটির সঙ্গেও পাত্তা পায়নি কাতালানরা। একই ব্যবধানে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের শঙ্কায় পড়েছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা।

বুধবার রাতে লিসবোয়ায় 'ই' গ্রুপের ম্যাচে বার্সেলোনাকে ৩-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে বেনফিকা। প্রথম ম্যাচে বায়ার্নের কাছেও একই ব্যবধানে হেরেছিল দলটি। বেনফিকার হয়ে হয়ে জোড়া গোল করেছেন দারউইন নুনেজ। অপর গোলটি করেন রাফা সিলভা।

লিওনেল মেসিকে ছাড়া চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই ধুঁকছিল বার্সেলোনা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তো বটেই লা লিগাতেও আশানুরূপ পারফরম্যান্স করতে পারেনি দলটি। এদিনের হারে গ্রুপ পর্ব উতরানোই কঠিন হয়ে গেল তাদের জন্য।

এদিন বলের দখল প্রায় ৬০ শতাংশ সময় ছিল বার্সেলোনারই। কিন্তু সে অর্থে আক্রমণ করতে পারেনি দলটি। ৮টি শট নিতে পারে তারা। যার মাত্র একটি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে ১২টি শট নিয়ে লক্ষ্যে ৬টি শট নেয় বেনফিকা। গোল আদায় করে নেয় তিনটি।

তবে গোল করার মতো সহজ দুটি সুযোগ পেয়েছিল বার্সেলোনা। কিন্তু সে সুযোগ দুটি নষ্ট করেন চলতি মৌসুমে ক্লাবটিতে যোগ দেওয়া লুক ডি ইয়ং। ফাঁকায় বল পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি।

দারুণ এক আক্রমণে এদিন ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। বাঁ প্রান্তে জুলিয়ান উইগলের থ্রু বল ধরে ডি-বক্সে ঢুকে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে প্রথম পোস্ট দিয়ে অসাধারণ এক শটে লক্ষ্যভেদ করেন নুনেজ। দুই মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারতো দলটি। রোমান ইয়েরেমচুক জোরালো শট নিতে না ব্যর্থ হলে নষ্ট হয় সে সুযোগ।

দশম মিনিটে অবিশ্বাস্য এক মিস লুক ডি ইয়ং। পেদ্রির পাসে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়েও শট না নিয়ে আরও নিশ্চিত হতে লুক পাস দেন ফ্র্যাঙ্কি ডি ইয়ং। কিন্তু লুকের শট এক ডিফেন্ডার ট্যাকল করেন। আলগা বলেও সুযোগ ছিল তাদের। তবে পেদ্রির শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে সমতায় ফেরার দারুণ সুযোগ নষ্ট হয় তাদের।

১৮তম মিনিটে পেদ্রির শট একেবারে বারপোস্ট ঘেঁষে লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে হতাশা বাড়ে দলটির। নয় মিনিট পর ফ্র্যাঙ্কির থ্রু পাসে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন মেমফিস ডিপাই। কিন্তু তার শট বেনফিকার এক খেলোয়াড় ব্লক করলে কোনো বিপদ হয়নি। ৩০তম মিনিটে আবারও সহজ একটি সুযোগ নষ্ট করেন লুক। পেদ্রির ক্রস থেকে লক্ষ্যে হেড না নিয়ে নিশ্চিত হতে ফের লুককে পাস দিয়েছিলেন ফ্র্যাঙ্কি। এবার লক্ষ্যেই শট নিতে পারেননি এ ডাচ ফরোয়ার্ড।

৫২তম বিপদ প্রায় ডেকে এনেছিলেন বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্ড্রে টের স্টেগেন। উইগলের বাড়ানো বল ফাঁকায় পেয়ে পান নুনেজ। কিন্তু সে বল ধরার আগেই বল ধরতে চেয়ে প্রায় মাঝমাঠে চলে এসেছিলেন টের স্টেগেন। বলও মিস করেন। গোলরক্ষক এগিয়ে আসায় ফাঁকা পোস্টে দূর থেকে শট নেন নুনেজ। কিন্তু তার শট বারপোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়।

চার মিনিট পর মেমফিসের ক্রস থেকে রোনালদ আরাহোর হেড থেকে ফাঁকা পোস্টেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি ফ্র্যাঙ্কি। তবে গোল হলেও ভিএআরে বাতিল হতো সে গোল। কারণ রিপ্লেতে দেখা গেছে হেড নেওয়ার সময় অফসাইডে ছিলেন আরাহো।

৬৬তম মিনিটে মেমফিসের ক্রস থেকে ভালো শট নিয়েছিলেন সের্জি রোবার্তো। তবে তার শট কর্নারের বিনিময়ে ব্লক করেন এক বেনফিকা খেলোয়াড়। তিন মিনিট পর আরও একটি গোল হজম করে অতিথিরা। ইয়ারেমচুকের সঙ্গে দেওয়া নেওয়া ফাঁকায় ঢুকে দারুণ শট নিয়েছিলেন জোয়াও মারিও। তার শট ঠেকান টের স্টেগেন। আলগা বল পেয়ে যান রাফা সিলভা। তার শট ঠেকাতে পারেননি কেউ।

৭৯তম মিনিটে বার্সার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন নুনেজ। সফল স্পটকিক থেকে লক্ষ্যভেদ করেন এ উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড। ডি-বক্সে গিলবার্তো জুনিয়রের হেড সের্জিনো ডেস্ট হাত দিয়ে ঠেকালে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তিন গোলে পিছিয়ে থেকেও নিজেদের গোছাতে পারেনি বার্সা। উল্টো ৮৭তম মিনিটে লাল কার্ড দেখে বহিষ্কার হন এরিক গার্সিয়া। 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত