রেজুওয়ান কোরেশী, জগন্নাথপুর

২৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ১২:১৫

ঘোষণা হয়নি তফসিল, জগন্নাথপুর উপনির্বাচনে সম্ভাব্যদের দৌড়ঝাঁপ

নির্বাচনের দুই মাসের মাথায় সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আকমল হোসেনের মৃত্যুতে পদ শূন্যের জন্য চিঠি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না হলেও এরইমধ্য প্রবাসী অধ্যুষিত এই উপজেলার আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে, অনেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন নির্বাচনের। আগ্রহী প্রবাসী প্রার্থীরাও দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তির তদবিরের জন্যে দেশে ফিরেছেন। কেউ কেউ প্রবাসে থেকেই মনোনয়নের তদবির শুরু করেছেন।

রাজধানীর একটি আবাসিক হোটেলে গত ২৬ ডিসেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ আকমল হোসেন। জনপ্রিয় রাজনীতিক আকমল হোসেন গেল দুই নভেম্বর জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিও ছিলেন।

৪ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ শূন্য ঘোষণার জন্য স্থানীয় সরকার সচিবের নিকট চিঠি পাঠান। পদ শূন্য ঘোষণার পর এই উপজেলার উপ-নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন।

এদিকে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই গুরুত্বপূর্ণ এই উপজেলায় ভোটে লড়ার জন্য প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছেন অনেক নেতা। ভোটে অংশ গ্রহণে আগ্রহী সরকার দলীয়রাই বেশি।

যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হরমুজ আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি যুক্তরাজ্য প্রবাসী সৈয়দ আবুল কাশেম, জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, জেলা কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বিজন কুমার দেব, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিরাজুল হক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি যুক্তরাজ্য প্রবাসী হারুন অর রশিদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক যুক্তরাজ্য প্রবাসী আলহাজ্ব আবুল হাসান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক মুক্তাদীর আহমদ মুক্তা, আওয়ামী লীগ নেতা মিন্টু রঞ্জন ধর, যুক্তরাজ্য যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক সাংবাদিক জুবায়ের আহমদ ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন নৌকার প্রার্থী হতে তদবির করছেন বলে জানা যাচ্ছে।

দলীয় দায়িত্বশীল নেতারা জানান, ডজন খানেক দলীয় নেতা দলের মনোনয়নের জন্য যোগাযোগ করছেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে ইতিপূর্বে যারা ইউনিয়ন পরিষদ বা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তাদের নাম অগ্রবর্তী করা হবে না বলেও জানান জেলা আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন বলেন, জগন্নাথপুর উপজেলায় আকমল হোসেনের শূন্যতা পূরণ করা কঠিন। তার মৃত্যুতে একটি নির্বাচনের কয়েক মাসের মাথায় আরেকবার নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা অনেক বেশি। উপজেলা, জেলা নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নানের সঙ্গে কথা বলে যোগ্য, গ্রহণযোগ্য প্রার্থীর নাম কেন্দ্রের দায়িত্বশীলদের কাছে সুপারিশ করা হবে। নৌকা যাকে দেওয়া হবে, সকলে তার পক্ষেই থাকতে হবে।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, জগন্নাথপুরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ডজন খানেক সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন। উপজেলা থেকে যেসব নাম আসবে, আমরা সেগুলো কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেব। কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলরা প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুরাদ উদ্দিন হাওলাদার বলেন, জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিজয়ী হওয়ার অল্প দিনের মধ্যে মারা গেছেন। পদটি শূন্য ঘোষণা করবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এরপর এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। এই উপজেলায় এক লাখ ৮৯ হাজার ৩৯ জন ভোটার রয়েছেন। এরমধ্যে ৯৫ হাজার ৩২৩ জন পুরুষ এবং নারী ভোটার ৯০ হাজার ৭১৬ জন।

জেলা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জাকির হোসেন জানান, গত ৪ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয়ের কাছে জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ শূন্য ঘোষণার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। পদ শূন্যের পর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত