০২ মার্চ, ২০১৬ ২৩:০১
অবিস্মরণীয়, বিস্ময়কর। কী বিশেষণে বিশেষায়িত করা যায় এই জয়কে! শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচ। যার পরতে পরতে রোমাঞ্চ। এ যেনো স্নায়ুর এক কঠিন পরীক্ষা। এমন নাটকীয় এক ম্যাচে দুর্দান্ত জয় পেয়েছ বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশ।
বুধবার (২ মার্চ) মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম ব্যাটিং বোলিং সব মাধ্যমেই নাস্তানাবুদ করেছে বাংলাদেশ। এ যেনো গত এশিয়া কাপের ফাইনালেরই প্রতিশোধ। স্বাধীনতার মাসে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এমন জয়ের চেয়ে মধুর আর কী হতে পারে!
২০১২ সালের এশিয়া কাপের ফাইনাল। ২ রানের জন্য কেঁদেছিল বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ ছিল পাকিস্তান। সেটাও ছিল মার্চের এক দিন। মাঠও ছিল মিরপুর শের-ই-বাংলা। সেখানেই অন্য এক মার্চে এসে প্রতিশোধ নিলো টাইগাররা।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠল বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে বিদায় ঘণ্টা বাজল পাকিস্তান, আরব আমিরাত ও শ্রীলঙ্কার। লিগ পদ্ধতির বাকি ম্যাচগুলো এখন নিতান্তই নিয়মরক্ষার। আগামী ৬ মার্চ ভারতের বিরুদ্ধে শিরোপা লড়াইয়ে মাঠে নামবে টিম টাইগার্স।
টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান করছিল ৭ উইকেটে ১২৯ রান। জবাবে বাংলাদেশ ৫ উইকেটে ৫ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। শেষ ওভারে দরকার ছিল তিন রান। মাহমুদুল্লাহ চার হাঁকিয়ে ফাইনালে তোলার উৎসবে মাতান পুরো দলকে, একই সঙ্গে পুরো বাংলাদেশকে।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই তামিম ইকবালকে হারিয়ে হোঁচট খেয়েছিল বাংলাদেশ। ১.৫ ওভারের মাথায় তিনি ইরফানের বলে এলবিডব্লিউর শিকার। সাত বলে চার রান করে সাজঘরে ফেরেন আশা-ভরসার প্রতীক তামিম। এরপর দেখেশুনে আগাতে থাকেন দ্বিতীয় উইকেটে সাব্বির ও সৌম্য। তবে আগের ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরিয়ান সাব্বির এদিন ব্যর্থতার খোলসে বন্দী। ১৫ বলে ১৪ রানের স্বভাববিরুদ্ধ ইনিংস খেলে তিনি বিদায় নেন আফ্রিদির বলে বোল্ড হয়ে। তবে এই জুটিতে রান আসে ৩৩।
এরপর বেশ দাপট দেখিয়ে আগাচ্ছিলেন সৌম্য সরকার। মনে হচ্ছিল টি২০ ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি তুলে নেবেন। কিন্তু তা আর হলো না। ব্যক্তিগত ৪৮ রানের মাথায় মোহাম্মদ আমিরের বলে সরাসরি বোল্ড হন সৌম্য। ৪৭ রানের এই ইনিংসে সৌম্য হাঁকিয়েছেন পাঁচটি চার ও একটি ছক্কা। এটিই সৌম্যের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। আগেরটি ছিল ৪৩ রানের।
সৌম্যের বিদায়ের পর তার পথেই রওনা দেন রান খরার মধ্যে থাকা বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম। ১৫ বলে ১২ রান করে তিনি শোয়েব মালিকের এলবিডব্লিউর শিকার। ১৪.২ ওভারে দলীয় রান তখন ৮৮।
আশা জাগাচ্ছিল সাকিব-রিয়াদ জুটি। কিন্তু আমিরের ইয়র্কার লেন্থের বল ফ্লিক করতে গিয়ে বোল্ড হলেন সাকিব। ১৩ বলে করেন আট রান। তবে মাঠে নেমেই আমিরের দুই বলে পরপর দুই চার হাঁকিয়ে খেলা জমিয়ে তোলেন মাশরাফি। তখন দুই ওভারে জয়ের জন্য দরকার ১৮ রান।
১৯তম ওভারে দুই নো বলের সৌজন্যে আসে ১৫ রান। শেষ ওভারে দরকার ছিল তিন রান। আনোয়ার আলীর প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন ফিনিশার মাহমুদ উল্লাহ।
এর আগে টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে চাপে পড়া পাকিস্তান সাত উইকেটে করে ১২৯ রান। দলের হয়ে ৪২ বলে সর্বোচ্চ ৫৮ রান করেন সরফরাজ আহমেদ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩০ বলে ৪১ রান আসে শোয়েব মালিকের ব্যাট থেকে। বাংলাদেশের হয়ে আল আমিন সর্বোচ্চ ২৫ রানে তিনটি উইকেট নেন। এছাড়া আরাফাত সানি দুটি, তাসকিন ও মাশরাফি নেন একটি করে উইকেট।
আপনার মন্তব্য