
১৬ মার্চ, ২০১৫ ১৫:৪২
১৭ মার্চ, ২০০৭ পোর্ট অব স্পেন! ভারতের বিপক্ষে গ্রুপ পর্যায়ের ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের সবার কাছে পৌঁছে যায় ভয়াবহ এক দুঃসংবাদ! মানজারুল ইসলাম রানা নেই! খুলনার ডুমুরিয়ার ঠিক এক দিন আগে এক সড়ক দূর্ঘটনায় মারা গেছেন তিনি। মুহুর্তেই শোকাচ্ছন্ন বাংলাদেশ টিম!
দলের সবার মধ্যে এক তাগিদ জন্ম নেয় অন্তত ভারতের বিপক্ষে রানা’র জন্যে খেলবে বাংলাদেশ। খেলেছিলও! ফলাফল সবারই জানা- বাংলাদেশ ম্যাচ জেতে ৫ উইকেটের ব্যবধানে।
রানা’র মৃত্যুর আট বছর হয়ে গেছে। আবারও বিশ্বকাপ চলছে। আবারও বাংলাদেশের সামনে ভারত, এবার কোয়ার্টার ফাইনালের মহারণ! না, রানা’র মৃত্যুর সঙ্গে ভারতের কোন যোগ নেই কিন্তু জয় উতসর্গ করা সে ম্যাচ ছিল ভারতের বিপক্ষে। একটা দল তার সাবেক সতীর্থের জন্যে খেলেছিল আগে- এবারও এলো সে সুযোগ আবার!
মানজারুল ইসলাম রানা’র জন্যে বাংলাদেশ খেলবে আবারও। ১৯মার্চ ভারতের ভারতের বিপক্ষে খেলা সে ম্যাচ জয়ে আবারও উতসর্গ করতে চায় বাংলাদেশ। সেই ২০০৭-র মতো এবারও মাঠে নেই কিন্তু রানা আছেন সে আগেকার মতো তাঁর আধ্যাত্ম্যিক উপস্থিতির মাধ্যমেই।
২০০৭ সালের ১৬ মার্চ নিজ শহর খুলনায় মর্মান্তিক এক সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ হারান মারজারুল রানা। ১৯৮৪ সালে জন্ম এই খেলোয়াড় পেশাদার খেলোয়াড়ী জীবনে যখন পা দিয়েছিলেন তখনই মোটরবাইক দূর্ঘটনায় প্রাণ হারান। জাতীয় দলের হয়ে ৬ টেস্ট এবং ২৫টি একদিনের ম্যাচ খেলা এই তরুণ না ফেরার দেশে চলে গেলেও রেখে গিয়েছেন অম্লাণ কিছু পারফরমেন্স।
জিম্বুাবুয়ের হারারে মাঠে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে অভিষেক হয় রানা’র। ৬ টেস্ট ম্যাচ খেলা এই তরুণ মাত্র ৫ উইকেট নিয়েছিলেন। তবে ৬ টেস্টের ১১ ইনিংসে রান করেছেন ২৫৭। সর্বোচ্চ করেছিলেন ৬৯ রান ভারতের বিপক্ষে জাতীয় দলের রঙিন জার্সি জড়িয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছিল তার। ২৫টি একদিনের ম্যাচ খেলে রান করেছেন ৩৩১ এবং বল করে উইকেট নিয়েছিলেন ২৩টি।
২০০৩ সালে চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মানজারুল ইসলামের ওয়ানডে অভিষেক হয়। সে সময়ের কোচ ডেভ হোয়াটমোর মানজারুল ইসলাম রানার বোলিং এবং ব্যাটিং দেখে তাকে দলে যোগ করেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০০৫ সালের ওয়ানডে সিরিজে তার বোলিং বাংলাদেশের সিরিজ জয়ে দারুণ অবদান রাখে। ২
২০০৭ সালের ১৮ মার্চ হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে যখন বাংলাদেশ ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপের মাঠে উপস্থিত সে সময়ে গোটা বিশ্ব স্মরণ করলো রানাকে। একজন টেস্ট ক্রিকেটারের মৃত্যুবরণে আইসিসি খেলা শুরুর আগে সেদিন পোর্ট অব স্পেন মাঠে এক মিনিট নিরাবতা পালন করে।
২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ চলাকালিন সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামের পূর্ব পশ্চিমের গ্যালারি স্ট্যাণ্ডকে মানজারুল ইসলাম রানা স্ট্যান্ড হিসেবে ঘোষণা করে।
আবারও রানা'র জন্যে খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ! পারবে কী বাংলাদেশ ২০০৭-র পুনরাবৃত্তি ঘটাতে?
আপনার মন্তব্য