স্পোর্টস ডেস্ক

২৬ জুন, ২০১৮ ২২:১৬

৪০ বছর পর বিশ্বকাপে পেরুর জয়

৪০ বছর পর বিশ্বকাপে খেলতে আসা একটা দলের জন্য অংশগ্রহণই বড় কথা হওয়ার কথা। কিন্তু দক্ষিণ আমেরিকার মানুষের রক্তে মিশে থাকে ফুটবল। তার এক ঝলক আজ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দেখাল পেরুভিয়ানরা। ৪০ বছরে প্রথম বিশ্বকাপ ম্যাচে জয়ের স্বাদ নিয়ে দেশের পথ ধরলেন গেরেরোরা। গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে পেরু।

সোচিতে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় মুখোমুখি হয়েছিল পেরু ও অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচের ১৮ মিনিটে আন্দ্রে কারিলোর গোলে লিড নেয় পেরু। দ্বিতীয়ার্ধের ৫০ মিনিটে অধিনায়ক পাওলো গুয়েরেরো গোল করে ব্যবধান বাড়ান। শেষ পর্যন্ত ওই দুই গোলেই জয় পেরুর।

দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে হলে জিততেই হবে। এমন সমীকরণ সামনে নিয়েই মাঠে নামে অস্ট্রেলিয়া। সোচির ফিশ্ট স্টেডিয়ামে মাঠে নেমে উল্টো পেরুর মুহূর্মুহূ আক্রমণের মুখে প্রথমার্ধেই ১-০ গোলে পিছিয়ে অস্ট্রেলিয়া। খেলার ১৮ মিনিটে আন্দ্রে ক্যারিলো অসাধারণ এক শটে বল জড়ান অস্ট্রেলিয়ার জালে। পরে ৫০ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করে পেরু। শেষ পর্যন্ত ব্যবধান দাঁড়ায় ২-০।

আগের দুই ম্যাচে মাত্র একটি ম্যাচ ড্র। ঝুলিতে অস্ট্রেলিয়ার পয়েন্ট আছে মাত্র ১টি। অন্যদিকে টানা দুই ম্যাচ হেরে ইতোমধ্যেই বিদায় নিশ্চিত করে ফেলেছে পেরু। শেষ ম্যাচে পেরুভিয়ানদের লক্ষ্য অন্তত একটিমাত্র জয়। অন্যদিকে, দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার জন্য অস্ট্রেলিয়ার সামনে জয় ভিন্ন কোনো উপায় খোলা নেই। এমন সমীকরণে আপাতত প্রথমার্ধ পর্যন্ত এগিয়ে লাতিন আমেরিকার দল পেরু।

পেরু অধিনায়ক পাওলো গুয়েরেরো এই বিশ্বকাপে এই একটিবার মাত্র নিজেকে মেলে ধরতে পারলেন। মাঝ মাঠ থেকে লম্বা এক পাসে অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণভাগের সামনে বল রিসিভ করেন গুয়েরেরো। এরপর বলটি কয়েকজনকে কাটিয়ে বাম প্রান্ত থেকে পাস দেন ডান প্রান্তে। সেখানেই ক্যারিলো ডান পায়ের দুর্দান্ত এক শট নেন। সেটিই জড়িয়ে গেলো অস্ট্রেলিয়ার জালে।

জয়ের জন্যই শুরু থেকে খেলতে থাকে অস্ট্রেলিয়া। এ কারণে প্রায়ই তাদের রক্ষণ ফাঁকা হয়ে যাচ্ছিলো। সে সুযোগটাই নিলো পেরু। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে ১৮তম মিনিটে গোলটি আদায় করে নিয়েছে।

প্রথমার্ধের ন্যায় দ্বিতীয়ার্ধেও পেরুর রক্ষণভাগে দারুণ চাপ সৃষ্টি করে খেলে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আরও একটি গোল হজম করে বসে সকারুজরা। প্রথম গোলে দারুণ অবদান ছিল পাওলো গুয়েরেরোর। দ্বিতীয় গোলটি তিনি নিজেই করেন। ত্রাউকোর সঙ্গে ওয়ান-টু করে বল নিয়ে এগিয়ে আসেন ফ্লোরেজ। আলতো চিপে বলটি গুয়েরেরোর কাছে পাঠিয়ে দেন ফ্লোরেজ। বল পেয়েই দারুণ এক ভলিতে অস্ট্রেলিয়ার জালে বল জড়িয়ে দেন গুয়েরেরো।

৬০ মিনিটে আজিজ অস্ট্রেরিয়ার বেহিচ দারুণ এক ভলি নিয়েছিলেন। কিন্তু বলটি বারের পাশ দিয়ে চলে যায় বাইরে। ম্যাচের বাকি ৩০ মিনিটও অস্ট্রেলিয়ার মুহূর্মুহু আক্রমণের তোড়ে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে পেরু রক্ষণভাগকে। কিন্তু গোল আদায় করতে পারেনি অসিরা।

অথচ শুরু থেকে প্রভাব বিস্তার করে খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচে বল দখলের লড়াইয়ের পরিসংখ্যান দেখলেই সেটা স্পষ্ট হয়ে যায়। কারণ, ৫৭ ভাগ বল দখলে ছিল অস্ট্রেলিয়ার আর ৪৩ ভাগ বল দখলে ছিল পেরুর। পেরুর জাল লক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়া শট নিয়েছে ৯টি। পেরু ৪টি। শট কাজে লেগেছে কেবল ২টি, তাও পেরুর।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত