ক্রীড়া প্রতিবেদক

১৩ আগস্ট, ২০১৫ ০০:২৪

সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপ : ‘ভারতকে ধরে দিবানি’

বুধবার অনুশীলনে বাংলাদেশ দল। ভারতের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে শেষবারের মতো নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়া!

ভারতকে ধরে দিবানি- এই লাইনটি উল্লেখ করলে কে কখন এই উক্তিটি করেছিলেন তা আর উল্লেখ করতে হয় না। ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ক্রিকেট ম্যাচের আগে সকল টাইগারপ্রেমীরই মুখের ডায়ালগ হয়ে উঠে কোন এক প্রসঙ্গে মাশরাফি বিন মর্তুজার করা এই উক্তিটি।

আজ (বৃহস্পতিবার) আবার প্রতিপক্ষ ভারত। হোক না তা ফুটবলে, হোক না তা অনুর্ধ-১৬'র লড়াই তাতে কী! মাশরাফি বিন মর্তুজা তো আজ ক্রিকেটকে ছাপিয়ে অদম্য বাঙালির প্রেরণারই প্রতীক হয়ে উঠেছেন। ফলে আজ সাফ অনুর্ধ-১৬ ফুটবল চ্যাস্পিয়নশিপে ভারতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আগেই নড়াইল এক্সপ্রেসের এই উক্তিটি উচ্চারিত হতেই পারে!

বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৬ দলের অধিনায়ক শাওন এমনটি বললেন না বটে, তবে ভারতকে যে ছেড়ে কথা কইবেন সেটা স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিলেন কালকের (বুধবার) অনুশীলনে।

একটি জয়, একটি দারুণ সূচনা একটা দলের শরীরী ভাষা কতটুকু বদলে দিতে পারে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হতে পারে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৬ দল। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে জয় নিয়ে বলতে যখন আমতা আমতা করছিলেন কোচ-অধিনায়ক, শুনিয়েছিলেন প্রস্তুতির অপর্যাপ্ততার কথা- সেখানে আজ ভারতকেও ছেড়ে কথা না বলার হুকার দিচ্ছে বাংলাদেশ।

মঙ্গলবারের ম্যাচে আক্রমণের পর আক্রমণ করে শ্রীলংকাকে পর্যুদস্ত করার রেশ এখনো তরতাজা বাংলাদেশ শিবিরে। এখনো আক্রমণাত্মক মেজাজে দল। বুধবার অনুশীলনে তাই বাংলাদেশ দলপতি শাওনের ঘোষণা- ভারতকে ছাড় দেবেন না তারা।

ভারত গত সাফ অনুর্ধ-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়ন দল। এ আসরেই আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৫-০ গোলে গুড়িয়ে দিয়েছে তারা। তাতে কী! এসব হিসেব-নিকেশ একদমই মাথায় আনতে চায় না বাংলাদেশ। নিজেদের মাঠ, দর্শক আগের ম্যাচ থেকে প্রাপ্ত উজ্জ্বীবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আজও জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে চায় বাংলাদেশ।

আজ বিকেল ৫টায় সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ বনাম ভারতের ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার সিলেটের বাংলাদেশ ফুটবল একাডেমির মাঠে অনুশীলন করে বাংলাদেশ। অনুশীলনের ফাঁকে খেলোয়াড়রা জানান, ভারতকে নিয়ে বাড়তি চিন্তা নয়, বরং নিজেদের স্বাভাবিক খেলার ধারাটা ধরে রেখে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে আজ মাঠে নামবেন তারা।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলার ভুলগুলো শুধরে নিয়েই আজ মাঠে নামতে চায় স্বাগতিকদলের কিশোররা।

ভারতের বিপক্ষে একটি দিক দিয়ে অন্তত এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। খেলা হচ্ছে নিজ দেশে, চেনা পরিবেশ, আর বিপুল দর্শক সমর্থন তো আছেই।

দর্শকদের অসাধারণ ভূমিকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বাংলাদেশ দলের কোচ সৈয়দ গোলাম জিলানীও। তিনি বলেন, ‘এই দেশ, এই দর্শক সবই আমাদের। সিলেটের দর্শকরা পুরোটা সময় আমাদের যে রকম সমর্থন দিয়ে গেছে, তা অতুলনীয়। তাদের সমর্থনের কারণেই আমরা এত ভালো খেলতে পেরেছি। ভারতের বিপক্ষেও এ সমর্থন আমাদের কাজে লাগবে।’ কোচের মতো বাংলাদেশ দলপতি শাওনও সিলেটের দর্শকদের অকুণ্ঠচিত্তে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বাংলাদেশ কোচ কোনো লক্ষ্যের কথা বলেননি। তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের পর বিনয়ী কোচের কন্ঠে ঝরলো প্রতিপক্ষের জন্য সাবধান বাণী, ‘সব দলের প্রতি সম্মান রয়েছে আমাদের। তবে আমি মনে করি আমরাই ফেভারিট। সামনে যে দলই পড়ুক না কেন আমরা লড়াই করব।’

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সহজ কয়েকটি সুযোগের বিষয়টি স্বীকার করে কোচ জিলানী বললেন, ‘শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আমরা কয়েকটি সহজ গোল মিস করেছি। ফিনিশিংটা আমাদের ভালো হয়নি। ভারতের বিপক্ষে আরো ভালো করতে হবে আমাদের।’

এমনিতে আজকের ম্যাচের আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গেছে দুই দলের। তাই আজকের ম্যাচটা অনেকটা নিয়ম রক্ষার। তবে আজ ভারতের বিপক্ষে জয় পেলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে বাংলাদেশ। সেক্ষেত্রে বি গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনায় থাকা শক্তিশালী নেপালের মুখোমুখি হতে হবে না বাংলাদেশকে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত