মোসাইদ রাহাত, সুনামগঞ্জ

১৫ জুন, ২০২০ ২১:৪৯

সুনামগঞ্জের ৮টি উপজেলার ১৫টি এলাকা রেড জোন

স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনুযায়ী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সুনামগঞ্জের ৮টি উপজেলার ১৫টি এলাকাকে রেডজোন করা হয়েছে। সোমবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন। মঙ্গলবার থেকে আগামী তিন সপ্তাহ’র জন্য এসকল এলাকাগুলোতে কঠোরভাবে রেডজোনিং কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানান তিনি।

এছাড়া কাল থেকে মানুষকে ঘরমুখী করতে কঠোরভাবে মাঠে অবস্থান করবে পুলিশ। এসময় বিনা কারণে কেউ ঘর থেকে বের হলে তাকে আটক করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।

সিভিল সার্জন সূত্রে জানাযায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনুযায়ী প্রতি এলাকাগুলোতে এক লক্ষে ৬০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী থাকলে সেই সকল এলাকাকে রেডজোনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সুনামগঞ্জের ১১ টি উপজেলার মধ্যে ৮টি উপজেলার ১৫টি এলাকাকে রেডজোনে আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। যার মধ্যে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় পুরো সুনামগঞ্জ পৌরসভা, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় পুর্ব পাগলা, পশ্চিম পাগলা ও জয়কলস ইউনিয়ন, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ ইউনিয়ন, তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়ন, জামালগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়ন, দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার, দোয়ারাবাজার সদর ও মান্নারগাঁও ইউনিয়ন, ছাতক উপজেলার ছাতক পৌরসভা, জাউয়া বাজার ও কালারুখা ইউনিয়ন এবং জগন্নাথপুর উপজেলার জগন্নাথপুর পৌরসভা ও সৈয়দপুর ইউনিয়নকে রেডজোন করা হয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়ন, জামালগঞ্জ উপজেলার সাচবাজার ইউনিয়ন, দোয়ারাবাজার উপজেলার পান্ডারগাঁও ও  নরসিংপুর ইউনিয়ন, ছাতক উপজেলার নোয়রাই ইউনিয়ন এবং জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নকে হলুদ জোন করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন



সিভিল সার্জন সূত্রে আরও জানাযায়,  বর্তমানে সুনামগঞ্জে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬৩ জন। যার মধ্যে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ১৫৬ জন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় ৩৬ জন, দিরাই উপজেলায় ১১ জন,ছাতক উপজেলায় ১৬১ জন, শাল্লা উপজেলায় ১৩ জন, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ১৮ জন, তাহিরপুর উপজেলায় ১৮ জন, জামালগঞ্জ উপজেলায় ৩৯ জন, ধর্মপাশা উপজেলায় ১৮ জন, দোয়ারাবাজার উপজেলায় ৪৪ জন এবং জগন্নাথপুর উপজেলায় ৪৯ হস  করোনায় আক্রান্ত রয়েছেন। সুনামগঞ্জে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১১৭ জন এবং মারা গিয়েছেন ৪ জন, যার মধ্যে ছাতক উপজেলারই ৩ জন এবং জামালগঞ্জ উপজেলার একজন রয়েছেন।
অন্যদিকে, রেডজোন করা এলাকাগুলোতে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ছাড়া সকল প্রকার দোকান ও গণপরিবহন বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। শুধুমাত্র ওষুধের দোকানগুলো সার্বক্ষণিক খোলা রাখা যাবে। এছাড়া রোডজোন করা এলাকাগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জরুরী প্রয়োজনে ঘর থেকে বাহির হওয়া যাবে তা না হলে বিনা কারণে কেউ ঘর থেকে বের হলে তাকে আটক করা হবে বলে জানানো হয়।  

এব্যাপারে  পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, রেডজোনের মধ্যে যদি কেউ পাড়ায় আড্ডায় দেয় পুলিশ দেখতে পায় তাহলে সাথে সাথে আটক করা হবে। একই সাথে নিরবতার ফাঁকে যাতে চুরি না বাড়ে সে দিকে খেয়াল রাখবে পুলিশ। জরুরী প্রয়োজনে যে কেউ স্বাস্থ্য বিধি মেনে বাইরে যেতে পারবেন সে বিষয়ে আমাদের আপত্তি নেই।

সুনামগঞ্জে সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন বলেন, সবাই সচেতন হওয়ার কোনও বিকল্প নেই। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের ঘরে থাকতে হবেই।  আমরা সুনামগঞ্জের ৮ উপজেলার ১৫ টি এলাকাকে রেডজোন চিহ্নিত করেছি। এখন প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রহণ করা হবে এবং এ রেডজোন মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হয়ে আগামী ৩ সপ্তাহ চলবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত