২৬ জুলাই, ২০২০ ১৩:২৭
টানা ১২১ দিন রাজধানীর ঢাকায় নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষকে খাবার বিতরণ করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সদ্য সাবেক সদস্য তানভীর হাসান সৈকত এবার কাজ করছেন হাওরাঞ্চল তথা সুনামগঞ্জের বন্যার্তদের জন্য। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ১৫০টি পরিবারকে খাবার দিচ্ছেন তিনি।
জানা যায়, করোনাভাইরাস শুরু পর থেকে ঢাকার ছিন্নমূল, অসহায় ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষদের টানা ১২১ দিন খাওয়ার ব্যবস্থা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ নেতা। তিনি সেখানে ১০০ দিন দুইবেলার খাবার ও ২১ দিন একবেলার খাবারের ব্যবস্থা করার পর তার ২০ সদস্যের একটি টিম নিয়ে সুনামগঞ্জের বানবাসী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
গত বুধবার সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের সোনাপুর বেদে পল্লীতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। সেখানের স্থানীয় সোনাপুর বেদে পল্লী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবস্থান করে তাদের মুখে ২ বেলা খাবার তুলে দিচ্ছেন প্রথম দিন থেকেই। বর্তমানে তার দলের ২ জন সদস্য অসুস্থ হয়ে ঢাকা ফিরে গেলেও ১৮ জন নিয়েই চালিয়ে যাচ্ছেন তার এ কার্যক্রম।
এদিকে বন্যায় পানিবন্দি হয়েও দুইবেলা খাবার পেয়ে খুশি বেদে পল্লীর মানুষরা। বন্যায় তাদের বাড়ি ঘরে পানি থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নেতা তানভীর হাসান সৈকত পাশে দাঁড়ানো ও তাদের দুইবেলা খাবার ব্যবস্থা করে দেওয়ায় তার কাছে কৃতজ্ঞ এ এলাকার মানুষজন।
সোনাপুর বেদে পল্লী এলাকার বাসিন্দা ফরিদ আহমদ বলেন, বড় ভাই আমাদের জন্য যে কষ্ট করতেছেন তা এর আগে কেউ করে নাই। ভাই আমাদের নিয়ম করে দুইবেলা খাওন দিতেছেন। বন্যার পানি ঘরের ভিতর থাকলেও চিন্তা আছি ছেলে-মেয়ে পরিবাররে খাবার কই থকি দিমু কিন্তু না উপরওয়ালা আমাদের এজন্য এই ভাইকে পাঠিয়েছে।
এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সদ্য সাবেক সদস্য তানভীর হাসান সৈকত জানান, বন্যাদুর্গত এলাকা হিসেবে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বেঁদে পল্লী সোনাপুরে তিন দিন ধরে দুই বেলা খাবার দিচ্ছি আমরা। প্রতিদিন ১৫০ পরিবারকে খাবার দেয়া হচ্ছে। এসব পরিবারে ৪ থেকে ৫ জন সদস্য আছেন। আমরা চেষ্টা করছি ওই এলাকার সবার মধ্যেই খাবার পৌছে দিতে।
তিনি বলেন, আমরা বন্যাদুর্গত এলাকা হিসেবে সুনামগঞ্জেই প্রথম কাজ শুরু করেছি। পরে যাব জামালপুর জেলায়। সেখানে সহায়তা শেষে অন্য দুর্গত জেলায় সহায়তা শুরু করবো। বাংলাদেশের প্রতিটি বন্যা দুর্গত এলাকায় যাওয়ায় আমাদের ইচ্ছা আছে।
তিনি আরও বলেন, বন্যাকবলিতদের কাছে খাবারের সংকট এখন বড় হয়ে উঠেছে। আমরা তাদের নিকট খাবার পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছি। শুধু খাবারের চাহিদা নয়, অন্যান্য চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করবো। তবে এর জন্য শুভাকাঙ্খীদের নিকট থেকে আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে কাজ করে যাবো।
তানভীর হাসান সৈকত বলেন, এ মানুষগুলোর সর্বাত্মক সহযোগিতা কিংবা সার্বিক দুর্গতি মোচনের সাধ্য আমাদের নেই। যে কদিন সামর্থ্য থাকবে সহমর্মী হয়ে পাশে থাকতে চাই। আমাদের সামর্থ্যের স্পর্ধা মানুষজনই, যারা আমাদের প্রতিনিয়ত সাহায্য করে আসছেন। সামনেও আপনাদের সাধ্যমতো আমাদের পাশে থাকার অনুরোধ জানাই।
আপনার মন্তব্য