নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ অক্টোবর, ২০২০ ১৭:২৫

পিবিআই কার্যালয়ে রায়হানের পরিবার

বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে মারা যাওয়া রায়হানের পরিবারের সদস্যরা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগশন (পিবিআই) কার্যালয়ে গিয়ে কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাত করেছেন।

বুধবার বিকেলে রায়হানের পরিবারের সদস্যরা পিবিআই'র সিলেট কার্যালয়ে যান। এসময় নগরীর ৮নং ওয়ার্ড কমিশনার মখলিসুর রহমান কামরান, ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইলিয়াসুর রহমান ইলিয়াস উপস্থিত ছিলেন।

এসময় পিবিআই, সিলেটের পুলিশ সুপার এস এম খায়রুজ্জামান তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, অতিসত্তর তাদেরকে ভালো সংবাদ দিতে পারবেন। এই মামলার তদন্ত কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলছে।

সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদকে হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে ৭২ ঘন্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলো তার পরিবার। গত রোববার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এসআই আকবরসহ অভিযুক্ত সকলকে গ্রেপ্তারে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন রায়হানের মা সালমা বেগম।

বেঁধে দেওয়া সময়সীমা (৭২ ঘন্টা) অতিক্রম হয়েছে বুধবার দুপুরে। এখনও প্রধান অভিযুক্ত আকবর হোসেন ভূইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। একমাত্র পুলিশ কনস্টেবল টুটু চন্দ্র দাস ছাড়া এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আর কোনো গ্রেপ্তার নেই। ফলে লাগাতার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে রায়হানের পরিবার। এমনটিই জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

তারা জানান, বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) পরিবার ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎ, পরদিন শুক্রবার বাদ জুমা মসজিদে মসজিদে রায়হানের জন্য দোয়া মাহফিল ও শনিবার বিকেল ৪টায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মদিনা মার্কেট পয়েন্টে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর ভোরে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনের শিকার হন রায়হান আহমদ (৩৪) নামের এক যুবক। পরে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে তিনি মারা যান। রায়হান সিলেট নগরীর আখালিয়ার নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি নগরীর রিকাবীবাজার স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের চেম্বারে কাজ করতেন।

এই ঘটনায় ১২ অক্টোবর রাতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হেফাজতে মৃত্যু আইনে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী।

এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে রায়হানকে ফাঁড়িতে এনে নির্যাতনের প্রাথমিক প্রমাণ পায় কমিটি। এই তদন্ত কমিটির সুপারিশে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাসকে সাময়িক বরখাস্ত এবং এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়।

স্ত্রীর দায়ের করা মামলাটির তদন্ত করছে পিবিআই। এই মামলায় মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) বন্দরবাজার ফাঁড়ির সদ্য বহিস্কৃত কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে পিবিআই। মামলার প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর পলাতক রয়েছেন বলে দাবি পুলিশের।

এদিকে সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ‘পুলিশি নির্যাতনে’ রায়হান আহমদকে হত্যার প্রেক্ষিতে সমালোচনার মুখে মহানগর পুলিশের (এসএমপি) কমিশনার গোলাম কিবরিয়াকে বদলি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) রাষ্ট্রপতির আদেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাকে বদলি করা হয়। একই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশের আরও ১৮ পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি/পদায়নের আদেশ দেয়া হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত