নিজস্ব প্রতিবেদক

০৭ নভেম্বর, ২০১৫ ১৬:০০

ফাঁসি চান বাবা, মায়ের দাবি ন্যায় বিচার

বহুল আলোচিত শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলার রায় কাল (রবিবার)। হত্যাকান্ডের চার মাসের মধ্যে দেশে-বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এ হত্যা মামলার রায় হতে যাচ্ছে।

আজ সকালে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধা এ রায় ঘোষণা করবেন।

নিজের ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করেছেন রাজনের বাবা শেখ আজিজুর রহমান।
শনিবার এক প্রতিক্রিয়ায় আজিজুর রহমান সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। আমার ছেলের মৃত্যুর সময় অনেক কষ্ট পেয়েছে। খুনিদের ফাঁসি হলে তার আত্মা একটু শান্তি পাবে। আমরাও শান্তি পাবো।

রাজনের বাবা দ্রুততম সময়ে বিচার সম্পন্ন হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, খুনিদের এমন শাস্তি হওয়া উচিত যাতে দেশে আর কেউ শিশুদের নির্যাতনের সাহস না পায়। দেশে যাতে শিশু নির্যাতন বন্ধ হয় এ জন্য এই রায় একটি দৃষ্টান্ত হতে পারে।

অপরদিকে রাজনের মা লুবনা বেগম বলেন, আমি ন্যায় বিচার চাই। আমার ছেলেকে তো আর পাবো না। আমরা প্রতিবন্ধি ছেলেকে ওরা অনেক কষ্ট দিয়ে মেরেছে। মৃত্যুর সময় এক ছোঁটা পানি চেয়েও সে পায়নি। এখন আমার কিছু চাওয়ার নেই। আমি কেবল ন্যায়বিচার চাই।

গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাওয়ে চুরির অপবাদ দিয়ে ১৩ বছরের শিশু সামিউল আলম রাজনকে বর্বোরোচত নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়।হত্যার পর নির্যাতনের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয় ঘাতকরা। ২৮ মিনিটের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এই ফাঁকেই দেশ ছেড়ে সৌদি আরব পালিয়ে যায় মামলার প্রধান অভিযুক্ত কামরুল ইসলাম। ভিডিও চিত্রে যাকে রাজনকে প্রহার করতে দেখা যায়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর সুরঞ্জিত তালুকদার গত ১৬ আগস্ট ১৩ জনের বিরুদ্ধে এ হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। ২২ আগস্ট আদালত মামলার চার্জশিট গ্রহণ করেন। ১৩ আসামীর মধ্যে কামরুলসহ ১১ জন কারাবন্দি ও দুই জন পলাতক রয়েছে। কারাগারে আটক মামলার চার্জশিটভুক্ত ১১ আসামী হচ্ছে- জালালাবাদ থানার কুমারগাঁও এলাকার শেখপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের পুত্র কামরুল ইসলাম (২৪) ও তার সহোদর মুহিত আলম (৩২) ও আলী হায়দার ওরফে আলী (৩৪),চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়না (৪৫), জালালাবাদ থানার টুকেরবাজার ইউনিয়নের পূর্ব জাঙ্গাইল গ্রামের মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিনের পুত্র নূর আহমদ ওরফে নুর মিয়া (২০), দুলাল আহমদ (৩০), আয়াজ আলী (৪৫), তাজ উদ্দিন বাদল (২৮), ফিরোজ মিয়া (৫০), আছমত আলী (৪২) ও রুহুল আমিন (২৫)।

কামরুল, তাজ উদ্দিন বাদল ও রুহুল আমিন ছাড়া বাকি ৮ জন এ ঘটনায় আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। আসামীদের মধ্যে পলাতক রয়েছে শামীম ও পাভেল।


গত ৭ সেপ্টেম্বর মামলাটি বিচারের জন্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করেন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাহেদুল করিম। এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর এই আদালতে মামলার প্রথম শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। ২২ সেপ্টেম্বর মামলার চার্জ গঠন করা হয়। ১ অক্টোবর থেকে শুরু হয় সাক্ষ্য গ্রহণ। 

গত ২৭ অক্টোবর সিলেট মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধা এ মামলার রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত