মোসাইদ রাহাত, সুনামগঞ্জ

২৩ এপ্রিল, ২০২১ ১৭:৩৯

লকডাউন উপেক্ষা করে সুনামগঞ্জে পশুর হাট

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করেছে। এ লকডাউন উপেক্ষা করে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার টুকেরবাজারে বসেছে পশুর হাট।

পশু বিক্রেতাদের দাবি বাজারের ইজারাদারের অনুমতি নিয়েই শুক্রবার (২২ এপ্রিল) এই হাট বসিয়েছেন তারা। এ নিয়ে এলাকার সচেতন মহলের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে পশু ব্যবসায়ীদের দাবি এই বাজারের মাধ্যমে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা নেই।

সরজমিনে, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের টুকেরবাজারে গিয়ে দেখাযায় প্রশাসনের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই ইজারাদার বসিয়েছেন পশুর হাট। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলের কথা বলা হলেও এখানের চিত্র ভিন্ন। হাটে আসা লোকজনের মুখে মাস্ক নেই।

সরকারে সর্বাত্মক লকডাউন দেওয়ার পরেও এমন হাট ও জনসমাগম নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। এ সময় প্রকাশ্যে পশুর বিক্রির রশিদ নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায় ইজারাদার মনিরুজ্জামানকে। প্রথমতে তিনি কিছু না বুঝলেও পরবর্তীতে সাংবাদিকে উপস্থিতি বুঝতে পেরে লুকিয়ে ফেলেন পশু বিক্রির রশিদ।

টুকেরবাজারে বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, সরকার লকডাউন দিয়েছে আমাদের ভালোর জন্য। কিন্তু এরা গরুর বাজার বসিয়ে মানুষের ভিড় বাড়াচ্ছে। এতে করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের শঙ্কা।

এদিকে গরু বিক্রি করতে অবদপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কাইয়ুম বলেন, পেটে দায়ে বাজারে গরু নিয়ে এসেছি। এখানে এসে দেখি বাজার খোলাই ছিল। করোনা আমাদের তেমন কিছু না করতে পারলেও ঘরে থাকলে আমরা এমনিতেই না খেয়ে মরে যাবো।

কামারটুক গ্রামের সেলিম মিয়া বলেন, আমরা বাজার খোলা থেকে গরু নিয়ে এসেছি। আর বাজারে এসে অনেকেই গরু বিক্রি করতে পারছে। তাই আমিও এসেছি। ঘরে কয়দিন থেকে খাবারের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। গরুটা বিক্রি করতে পারলে কিছু টাকা পাওয়া যাবে। তখন আমাদের জন্যও ভালো হবে। না হলে না খেয়ে মরতে হবে।

অন্যদিকে এই প্রতিবেদক বাজারের ইজারাদার মনিরুজ্জামানের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি প্রথমে এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না জানালেও, পরবর্তী তিনি বাজার খোলার দোষ দিলেন বিক্রেতার উপর।

তিনি বলেন, আমরা আগেই মাইকিং করে নিষেধ দিয়েছি বাজার বন্ধ। তারপরেও অনেকে গরু-ছাগল নিয়ে বাজারে এসেছে। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। তবে আমরা কোনো রিসিট দিচ্ছি না। উলটো তাদের বাজার থেকে পশু গুলোকে সরিয়ে নিতে অনুরোধ করছি।

তবে রশিদ কেন রাখা সেই প্রশ্ন করলে তিনি এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান।

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান শাহরিয়ার বলেন, প্রশাসন লকডাউনের মধ্যেও পশুর হাট বসানোর কোন অনুমতি দেইনি। তবে আপনি যেহেতু বলছেন আমি আমরা মোবাইল কোর্টের টিম পাঠাবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত