তাহিরপুর প্রতিনিধি

১৩ জুন, ২০২১ ২১:৪৩

তাহিরপুর সীমান্তের লালঘাট-বাগলী সড়কের বেহাল দশা

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের সীমান্তের বাগলী শুল্ক বন্দরে চলাচলের লালঘাট-বাগলী দু-কিলোমিটার মাটির সড়কে বেহাল দশা। ফলে বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন এলাকার মানুষ।

স্থানীয় এলাকাবাসী, ব্যবসায়ী, চলাচলকারী মানুষজন এবং যানবাহন চালকরা বারবার সড়কটি পাকাকরনের দাবী জানিয়ে আসলেও আমলেই নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে সর্বস্থরের জনসাধারণের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জানা যায়,উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের সাথে উপজেলা সদরের সাথে সড়ক পথের কোন যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। ফলে প্রতিনিয়ত প্রায় আড়াই লক্ষাধিক জনগোষ্ঠী দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শুল্ক বন্দরের(বড়ছরা,চারাগাও ও বাগলী) সাথে কয়লা ও চুনাপাথর পরিবহনে বাগলী শুল্ক বন্দরে চলাচলের লালঘাট-বাগলী ২কিলোমিটার সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

এছাড়াও এই সড়কটি দিয়ে পার্শ্ববর্তী মধ্যনগর থানা ও ধর্মপাশা উপজেলা দিয়ে কমলাকান্দ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, ঢাকাসহ বিভিন্ন উপজেলা ও জেলার সাথে ও বাগলী থেকে চারাগাও, বড়ছড়া শুল্ক বন্দর হয়ে তাহিরপুর উপজেলা ও জেলার সাথে সীমান্তের এ সড়ক পথে হাজার হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। কিন্তু বাগলী-লালঘাট দুই কিলোমিটার মাটির এ সড়কটি এখনও পাকাকরন করা হয়নি। ফলে বৃষ্টিহীন মাটির সড়কটি দিয়ে কোন রকমে চলাচল করা গেলেও বর্ষায় পাহাড়ি ঢল আর সামান্য বৃষ্টি হলে চলাচলের জন্য একবারেই অযোগ্য হয়ে পড়ে। তখন পায়ে হেটেও চলাচল করা যায় না। আর বিভিন্ন যানবাহনে উপায় না পেয়ে চলাচল করতে গিয়ে অনেকেই আহত হয়েছেন।

বাগলী বাজারের মনির মিয়া জানান, বাগলী থেকে লালঘাট সড়কটি আমাদের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিকল্প পথে ব্যবস্থা না থাকার আমাদের সবাইকে চরম দুর্ভোগের শিকার হয়ে চলাচল করতে বাধ্য হতে হচ্ছে। যেন কারো কোন দায় নেই। এই সড়কটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানাই।

মটর সাইকেল চালক শাকিল মিয়া বলেন, বৃষ্টি হলে মাটির এই সড়ক দিয়ে চলাচল করি না। কারণ যাত্রী নিয়ে চলাচলতো দুরের কথা পায়ে হেটেই চলাচল করা যায় না। অনেকেই আহত হয়েছে এই সড়কটি দিয়ে চলাচলের সময়। এই সড়কটির কারণে কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছে।

এই সড়ক দিয়ে ধর্মপাশা হয়ে ময়মনসিংহ যাতায়াত করেন শিক্ষক সাজিদুর রহমান। তিনি বলেন, এই সড়ক দিয়ে কম সময়ে বাড়িতে যেতে পারি। কিন্তু লালঘাট থেকে বাগলী পর্যন্ত মাটির সড়কটির কারণে চরম কষ্টের শিকার হতে হচ্ছে দীর্ঘ দিন ধরেই। সড়কটি পাকা হলে এই এলাকার বেকার যুবকরা টমটম, সিএনজি ও মটর সাইকেলে যাত্রী পরিবহন করে জীবন জীবিকা পরিচালনা করতে পারত। আর আমার মত অনেকেই চলাচলের এর সুফল ভোগ করতে পারব।

তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর খোকন বলেন, উপজেলার সীমান্তের একমাত্র সড়কের লালঘাট থেকে বাগলী পর্যন্ত সড়কটির বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। মেরামত করা হলে এই সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী মানুষজন উপকৃত হবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হোসেন খাঁন জানান, সীমান্তের এই সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর সড়কটির দু-কিলোমিটার মাটির সড়ক পাকা করে জনস্বার্থে দ্রুত চলাচলের উপযোগী করার জন্য সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের সুনজর দেয়া প্রয়োজন।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান কবির জানান, এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত