নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ জুন, ২০২১ ২২:৪৪

পরিবেশ কর্মকর্তার বাসায় গৃহকর্মীকে নির্যাতনের ‘প্রমাণ পায়নি’ পুলিশ

পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট বিাভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালকের বাসা থেকে বুধবার দুপুরে এক কিশোরীকে উদ্ধার করে পুলিশ। রুনা আক্তার নামের ওই গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয়ের পরিচালক এমরান হোসেনের স্ত্রী ফারাহানা আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধে।

বুধবার দুপুরে নগরের শাহজালাল উপশহর এলাকার ঘরের ভেতরে ওই কিশোরীর কান্না শুনতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। পরে শাহপরান থানা পুলিশ গিয়ে ঘরের ভেতরের বাথরুম থেকে কিশোরী রুনাকে উদ্ধার করে। বিকেলে ফরাহানা আলম চৌধুরীকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

তবে জিজ্ঞাসাবাদে কিশোরী রুনা আক্তারকে নির্যাতনের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বুধবার রাতে শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরকে বলেন, আমরা ওই কিশোরী ও গৃহকর্ত্রী ফারাহানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে নির্যাতনের সত্যতা মিলেনি। এছাড়া নারী পুলিশ দিয়ে রুণা শরীর পরীক্ষা করেও নির্যাতনের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

ওসি বলেন, থানায় আনার পর ওই কিশোরী আমাদের বলেছে, তার কাজ করতে ভালো লাগছে না। বাসায় থাকতে বন্দি মনে হচ্ছে। সে গ্রামের বাড়িতে ফিরে যেতে চায়। এজন্য কান্না করেছিলো।

ফরাহানা আলম চৌধুরীকে ছেড়ে দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, এখন পর্যন্ত তিনি থানায় আছেন। আমরা কিশোরীর পরিবারকে খবর দিয়েছি। তারা আসার পর তাদের সাথে কথা বলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয়ের পরিচালক এমরান হোসেনের স্ত্রী ফরাহানা আলম চৌধুরী পেশায় ব্যাংকার। তিনি পূবালী ব্যাংকে কর্মরত আছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিলেট নগরের শাহজালাল উপশহরের ই-ব্লকের ১ নং রোডের ১১ নং বাসা ফিরুজা মঞ্জিলের ৪ তলায় পরিবার নিয়ে থাকেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক এমরান হোসেন। বুধবার সকাল থেকে ওই আসার ভেতরে এক কিশোরীর কান্না শুনতে পান প্রতিবেশিরা। বুধবার দুপুরে প্রতিবেশিরা পুলিশকে ধবর দেন। পুলিশ গিয়ে গৃহকর্মী কিশোরীকে উদ্ধার করা।

তাৎক্ষণিকভাবে কিশোরীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গৃহকর্মী রুনা আক্তারকে মারধরের পর বাথরুমে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছিলো।  নির্যাতনের সময় তার শরীরে মরিচের গুড়োও ছিটিয়ে দেয়া হয়।

স্থানীয়দের কাছ থেকে কিশোরীর কান্নার খবর পেয়ে পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন উপশহর এলাকার সিটি কাউন্সিলর সালেহ আহমদ সেলিম।

তিনি বলেন, পরিবশ অধিদপ্তরের পরিচালক এমরান হোসেনের স্ত্রী গৃহকর্মী রুনাকে প্রায় নির্যাতন করতেন বলে স্থানীয়রা আমার কাছে অভিযোগ করেছেন।

তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন পরিবশ অধিদপ্তরের পরিচালক এমরান হোসেন ও তার স্ত্রী ফারহানা আহমদ চৌধুরী।

বিকেলে নিজ বাসায় সাংবাদিকদের কাছে তারা বলেন, গত মাসের ২২ তারিখ ওই মেয়ে আমাদের বাসায় কাজের জন্য নিয়ে আসি। কিন্তু আসার পর থেকেই সে কিছুটা অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে এবং আমাদের বাসা থেকে চলে যাওয়ার বায়না ধরে। যার মাধ্যমে তাকে আমরা পেয়েছিলাম সেই ব্যক্তির কাছে আগামীকাল ওই মেয়েকে পৌঁছে দেয়ার কথা। কিন্তু এরই মাঝে আজ সে আমার দুই সন্তানকে মারধর করে বাথরুমের ভেতর গিয়ে নিজেই সিটকিনি লাগিয়ে অহেতুক চিৎকার-চেচামেচি করে একটি বিব্রতর পরিবেশ তৈরি করেছে।

রুনার শরীরে মরিচের গুড়ো ছিটিয়ে দেয়ার অভিযোগের বিষয়ে ফারহানা আহমদ চৌধুরী বলেন, এটি সে মাঝে মাঝে নিজেই নিজেই করে। তাকে নাকি ভূতে ধরে- এই ধারনা থেকে সে নিজেই এটি করে। তবে আমার সামনে করতে চাইলে এটি আমি বাঁধা দেই।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত