কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

২৫ জুলাই, ২০২১ ১৮:৪৯

তিন জাতের তরমুজ চাষে কৃষক মতিনের অভাবনীয় সাফল্য

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী পাত্রখোলা এলাকার কৃষক আব্দুল মতিন তিন জাতের হাইব্রিড তরমুজ চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এবং লাল তীরের সার্বিক সহযোগিতা তিনি এই তিন জাতের তরমুজ চাষ করেন।

তার সাফল্য দেখে খোদ কৃষি বিভাগই বিস্মিত। এই তরমুজ চাষ করে এলাকার অন্যান্য কৃষকদের মধ্যেও সাড়া জাগিয়েছেন তিনি। তার চাষ করা জাতগুলো হলো ব্ল্যাকবেবি, মধুমালা ও হলুদ রঙ্গের লালতীর এর ল্যনফাই (LanFei) জাতের হলুদ তরমুজ।

শনিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে সরেজমিনে আব্দুল মতিনের তরমুজ ক্ষেত ফলাফল পরিদর্শনে আসেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার এর উপ-পরিচালকসহ এলাকার অন্যান্য কৃষকগণ।

এ সময় সফল কৃষক আব্দুল মতিন জানান, তার দুই বিঘা জমিতে এই তিন জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। ইতিমধ্যেই তিনি ফল বিক্রি করা শুরু করেছেন। তিন জাতের মধ্যে হলুদ রঙের লালতীরের হাইব্রিড, ল্যনফাই (LanFei) জাতটি সর্বাধিক ফলন হয়েছে। ফলের ওজন এবং আকারে সবাইকে আকর্ষণ করেছে। শুধু আকার নয় এর স্বাদ অসাধারণ। মিষ্টি বেশি তাই বাজারে এরদরও ভালো পাচ্ছেন।

তিনি জানান, এই তিন জাতের তরমুজ চাষ করতে এখন পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। আর এখন পর্যন্ত বিক্রি করেছেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মতো। মাঠে যে পরিমাণ ফলন রয়েছে এতে তিনি আরও দেড় থেকে দুই লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী।

আব্দুল মতিন আরও জানান, ল্যনফাই জাতটির ফলন অন্যান্যদের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি এবং ফলের ওজন এক একটি ৩ থেকে ৪কেজি এবং ফলে মিষ্টির পরিমাণও অন্যান্য জাতের চেয়ে অনেক গুণ বেশী। তাই আগামিতে তিনি ব্যাপকভাবে এই জাতের তরমুজ চাষ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। ফলন দেখতে তার জমি পরিদর্শন করেন স্থানীয় আশপাশের কৃষকরা। তারাও আগামীতে বিস্তৃতভাবে এজাতের চাষ করবেন বলে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

এই প্রদর্শনীর বীজ এর উৎস প্রতিষ্ঠান লালতীর সীড এর লিমিটেড এর বিভাগীয় ব্যবস্থাপক তাপস চক্রবর্তী জানান, হাইব্রিড, ল্যনফাই জাতটি সবুজ ডোরাকাটাও ভিতরে হলুদ রঙ্গের শাঁসযুক্ত, অধিক মিষ্টি। উত্তম পরিচর্যায় একেকটির তরমুজ এর ওজন হয় ৫ থেকে ৬ কেজি। সারা বছরব্যাপী মাচায় ও মাঠে চাষ করা যায়। এফলের পরিপক্বতার সময় আসে ৬৫ থেকে ৭০ দিনে।

জাতটি চাষ করতে প্রতি শতকে বীজের পরিমাণ লাগে মাত্র ১ গ্রাম। উত্তম পরিচর্যাতে একরে ফলন উৎপাদন হয় ৩০ থেকে ৩৫টন। কৃষকরা উপযুক্ত দাম পেলে এই জাতগুলো চাষে দিন দিন আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে বলে তাপস চক্রবর্তী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এ প্রসঙ্গে মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল জানান, এ প্রদর্শনীতে তিন জাতের বীজ লাগানো হয়েছে। এর মধ্যে অধিক ফলনও ফলের মিষ্টতার পরিমাণেও সবদিক থেকে এগিয়ে কৃষকের মন জয় করেছে হাইব্রিড, ল্যনফাই জাতটি। জেলার অন্যান্য উপজেলাতেও এমনি কৃষকদের মাঝে এই জাতগুলোর চাষ ছড়িয়ে দিতে চাই। যেন কৃষকরা উচ্চমূল্যের ফল এবং সবজি চাষ করে অধিক লাভবান হতে পারেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত