নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার

১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১২:৪৩

শ্রীমঙ্গলে রেলের জমি উদ্ধার অভিযানে বাধা, এক্সেভেটরে আগুন

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে রেলের দখলকৃত জমি উদ্ধারে অভিযানের সময় একটি এক্সেভেটরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে শহরের ভানুগাছ সড়কে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিসের ফায়ারম্যানরা ঘটনাস্থলে এসে এক্সেভেটরের আগুন নিভিয়ে ফেলে।

শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের ইনচার্জ মিজানুর রহমান জানান, খবর পেয়ে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে। কারা এ আগুন লাগিয়েছে তা জানাতে পারেনি এই কর্মকর্তা। এক্সেভেটরের কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা তদন্ত করলে জানা যাবে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,  ভানুগাছ সড়কের পাশের রেলের জমির উপর বিভিন্ন স্থাপনা  উচ্ছেদ করার পরিকল্পনা ছিল রেল বিভাগের। সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সেখানে একটি এক্সেভেটর আনা হয়। এক্সেভেটরটি রেলগেট পয়েন্টে আসা মাত্র কয়েকজন দুর্বৃত্ত এক্সেভেটরের কেবিনে পেট্রল দিয়ে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। আগুনে এই যন্ত্রটির ড্রাইভার কেবিন ও নীচের অংশ সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল জোনের সহকারী এস্টেট অফিসার আতিকুল ইসলাম বলেন, আজ ওই এলাকার রেলের প্রায় ২৮৭ জায়গা উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযানের প্রস্তুতি নেয়া ছিল। অভিযানের কাজের জন্য এক্সেভেটর যন্ত্রটি সেখানে নেয়া হয়েছিলো।

এদিকে দখলকৃত জায়গায় উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করতে গেলে বাধার মুখে পরে রেলওয়ে কর্মকর্তারাসহ স্থানীয় প্রশাসন৷বিরোধপূর্ন ওই জায়গায় আদালতের একটি স্থিতাবস্থার কাগজ নিয়ে দখলকৃত জায়গার কয়েকজন ব্যবসায়ী উদ্ধার অভিযান পরিচালনায় বাঁধা দেন৷

শ্রীমঙ্গলের উপজেলা নির্বাহী অফিসার নজরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের জানান, রেলের মোট জায়গা এখানে আছে গুইশো সাতাশি একর,তার মধ্যে একশো সাতচল্লিশ একর জায়গা নিয়ে বিরোধ আছে৷ আগামী মঙ্গলবার এই স্থিতাবস্থার কাগজপত্র নিয়ে মামলার বাদীকে আসতে বলেছি,কাগজপত্র দেখে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে৷

উল্লেখ্য, সর্বশেষ দীর্ঘ ৩৮ বছর পর গত ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর রেলের শতকোটি টাকার এই ভূমি উদ্ধার অভিযান  চালায় বেল বিভাগ। শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ২টি বুলডোজার দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। এতে শহরের প্রভাবশালীদের দখলে থাকা ভানুগাছ সড়কের মুক্তিযোদ্ধা কৃষি নার্সারি প্রকল্প, অভিজাত রেস্টুরেন্ট, গ্যাস সিলিন্ডারের গুদাম, ফার্নিচারের শোরুম, সেলুন, চা পাতার দোকান, বাসা বাড়ি, ভ্যারাইটিজ ষ্টোর, ফার্মেসি, হার্ডওয়্যারের দোকান, ওয়ার্কশপ, ট্রান্সপোর্ট অফিসসহ শতাধিক পাকা স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়।

এরপর রেল বিভাগের দেখভালের অভাবে এই জমিগুলো আবারো দখল করে স্থাপনা নির্মাণ শুরু করে দখলদাররা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত