নিজস্ব প্রতিবেদক

১১ অক্টোবর, ২০২১ ২১:৫৯

প্রতিপক্ষ আমাকে শিবির বানানোর চেষ্টা করছে, দাবি ইমাদের

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মো. ইকবাল হোসেন ইমাদ দাবি করেছেন, তার নামের সাথে মিল থাকা ইমাদ নামের অন্য ব্যাক্তি জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত। ওই ইমাদ একটি ইসলামী ব্যাংকে বর্তমানে চাকরি করছেন। নামের সাথে মিল থাকায় প্রতিপক্ষ ফেসবুক পেজে তার ছবি লাগিয়ে ওই ইমাদের কার্যক্রম তুলে ধরে মিথ্যা অপপ্রচার করছে।
 
সোমবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

ইকবাল হোসেন ইমাদ দাবি করেন, তিনি বা তার পরিবার কোনোদিন জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না বা কোনোদিন জড়িত থাকার সম্ভাবনাও নেই।

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে  চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান ইমাদ। রোববার দলটির মনোনয়ন বোর্ডের সভায় ইমাদকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

ইমাদকে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন প্রদানের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই ফেসবুকে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীই ইমাদ ছাত্রশিবিরের উপজেলা শাধার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন দাবি করে দলীয় এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন।

ফেসবুকে ইকবাল এইচ ইমাদ নামের একটি আইডি থেকে যুদ্ধাপরাধী ও জামায়াতেরর সশর্থনের দেওয়া বিভিন্ন সময়ের স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাও জানিয়েছেন, ইকবাল হোসেন ইমাদ ২০০৬-২০০৭ সালে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ছিলেন। ২০১৬ সাল পর্যন্ত জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৮ সালের দিকে আওয়ামী লীগে যোগ দেন তিনি।

এনিয়ে সমালোচনার মুখে সোমবার বিকেলে জরুরী সংবাদ সম্মেলনে আসেন ইকবাল হোসেন ইমাদ।

এতে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানিয়েছেন, নৌকা প্রতীক না পেয়ে তাকে প্রতিপক্ষ তাকে জামায়াত-শিবির বানানোর চেষ্টা করছে। ২০০৫ সালে এইচএসসি পাস করে ২০০৭ সালে তিনি উচ্চ শিক্ষার্থে বিদেশ চলে যান। ২০১৬ সাথে দেশে এসে ব্যবসা শুরু করেন এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেন। তিনি দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য।

ইমাদ বলেন, দলের জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলের ১৮ ভোটের মধ্যে ১১টি ভোট পান তিনি। দল তাকে নৌকা প্রতীকের জন্য মনোনীত করেছে। কিন্তু নির্বাচন ও মনোনয়নকে সামনে রেখে প্রতিপক্ষ তার ছবি ব্যবহার করে ইকবাল হোসেন ইমাদ নামে ফেসবুক পেজ খুলে। মূলত একই ইউনিয়নের মাওলানা আব্দুন নুরের ছেলে ইকবাল হোসেন ইমাদ জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনি উপজেলা শিবিরের সেক্রেটারি ছিলেন। প্রতিপক্ষ সেই ইমাদের বিভিন্ন স্ট্যাটাসের স্কিনশট নিয়ে তার নামের সাথে জড়িয়ে অপপ্রচার করছে।

এসময় ইমাদ আরও বলেন, আমি জামায়াত-শিবির করলে আমার বিরুদ্ধে মামলা থাকত। কিন্তু কোনো মামলা নেই। আমার কিছু আত্মীয় আল ইসলাহ ও তালামীযে ইসলামিয়ার রাজনীতির সাথে জড়িত। এসব সংগঠন নির্বাচনে আওয়ামী লীগকেই সমর্থন দিয়েছে।

তিনি বলেন, আমি বিদেশ ঘুরেছি। কিভাবে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হয় আমার জানা আছে। নির্বাচিত হলে ইউনিয়নকে আধুনিক করতে সময় লাগবে না। সংবাদ সম্মেল প্রকৃত সত্য যাচাই-বাচাই করে উপস্থাপন করার দাবি জানিয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন ইমাদ।

সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ হাশিম, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক জামাল উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মইন উদ্দিন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমির আলী, শ্রমিক লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ, আওয়ামী লীগ নেতা নুর ইসলাম, আব্দুল্লাহ, আইন উল্লাহ, আপ্তাব উদ্দিন, নুর ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ময়না মিয়া, জমসিদ আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত