নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ অক্টোবর, ২০২১ ১৮:৩৯

ইমাদের নৌকার মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইকবাল হোসেন ইমাদের দলীয় মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন একই দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী সাইফুল ইসলাম।

ইমাদকে ছাত্রশিবিরের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাবেক নেতা দাবি করে স্বাধীনতাবিরোধী অনুপ্রবেশকারীর হাত থেকে দলকে রক্ষারও আহ্বান জানান তিনি।
 
বৃহস্পতিবার বিকেলে 'তৃণমূল আওয়ামী লীগের' ব্যানারে  সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ‌এ দাবি করেন আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল।

সাইফুল ইসলামও রণিখাই ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তবে দলীয় মনোনয়ন বোর্ড ইকবাল হোসেন ইমাদকে মনোনয়ন প্রদান করে।

ইমাদকে নৌকা প্রতীক প্রদানের পর থেকেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যেই ক্ষোভ দেখা দেয়। ইমাদ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ছিলেন বলেও জানা গেছে। যদিও ইমাদ প্রথম থেকেই নিজের শিবির সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে ইমাদের প্রতিদ্বন্দ্বি মনোনয়ন প্রত্যাশী সাইফুল বলেন, ইমাদ ২০১৮ সালের শেষ দিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাসিমকে ম্যানেজ করে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ২০১৯ সালে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য হন। এসময় তৃণমূল আওয়ামী লীগের সকল স্তরের নেতাকর্মী প্রতিবাদ করলে ইউনিয়ন সভাপতি আব্দুল হাসিম আমলে নেননি এবং এড়িয়ে যান। সর্বশেষ হাসিমকে ম্যানেজ করে দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীতা ও শেষ পর্যন্ত নৌকার মনোনয়ন পেয়ে যান।

সাইফুল বলেন, ইমাদ যুক্তরাজ্য ও দেশে থাকাবস্থায় তার ফেসবুক আইডি ২০২১ সালের ২ অক্টোবর পর্যন্ত অ্যাক্টিভ রাখেন। ওই আইডিতে সরকার বিরোধী পোস্ট রয়েছে। যা বন্ধ করে বর্তমানে নতুন নামে আরেকটি ফেসবুক আইডি চালু করেন।

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনকারী সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধেও অনুপ্রবেশের অভিযোগ রয়েছে। তিনি দুই বছর আগে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, বিএনপিতে তিনি ছিলেন এমন কোনো প্রমাণ নেই। প্রতিপক্ষই মিথ্যাচার করছে।

বক্তব্যে তিনি আরও জানান, ইকবাল হোসেন ইমাদ দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নের খাগাইল গ্রামের মো. আব্দুস সালামের ছেলে। ২০০৩ সালে দলইরগাও স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে এম. সাইফুর রহমান কলেজে ভর্তি হয়ে ২০০৪ সাল থেকে ইসলামি ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে ২০০৬ সালের (আংশিক) তিনি কোম্পানীগঞ্জ থানা শিবিরের সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৬ সালে সেক্রেটারি থাকাকালীন থানা শিবিরের সভাপতি ছিলেন মুহাম্মদ আব্দুশ শাকুর ও ২০০৭ সালে ছিলেন শফিকুল ইসলাম। যা শিবিরের সাংগঠনিক ২০০৯ ও ২০১০ সালের ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ রয়েছে। ইকবাল হোসেন ইমাদ ২০১০ সালের মার্চে যুক্তরাজ্য যাওয়ার আগ পর্যন্ত জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৬ সালের শেষের দিকে ইমাদ দেশে ফিরে জামায়াত-শিবিরের বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেন ও স্বাধীনতাবিরোধী এ দলের অর্থতহবিলে অনেক টাকা-পয়সা দান করেছেন।

বক্তব্যে সাইফুল আরও বলেন, নৌকার প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পর তৃণমূল আওয়ামী লীগে সমালোচনা ঝড় ওঠে । তখন তড়িঘড়ি করে সংবাদ সম্মেলন করে ইকবাল হোসেন ইমাদ বেশ কিছু মিথ্যা তথ্য সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, যে শিবির নেতা ইকবাল হোসেনের কথা বলা হচ্ছে সেই ব্যক্তি তিনি নন। কিন্তু কথাটি চরম মিথ্যাচার। তিনি যে ব্যক্তির কথা বলছেন তার নামও ইকবাল হোসেন। ওই ইকবাল দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নের পশ্চিম বর্ণী গ্রামের মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুন নুরের ছেলে। কিন্তু চেয়ারম্যান প্রার্থী ইকবাল হোসেন ইমাদ দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নের খাগাইল গ্রামের মো. আব্দুস সালামের ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল ইসলামের পক্ষে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল মোস্তাকিন। উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগর সামসুল ইসলাম, আকিল উদ্দিন, বাবুল দাস, আপ্তাব উদ্দিন প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত