নবীগঞ্জ প্রতিনিধি:

১৫ অক্টোবর, ২০২১ ০০:৫৫

নবীগঞ্জে পূজামণ্ডপে মাদ্রাসা ছাত্রদের হামলা, ওসিসহ আহত ২০

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের গুমগুমিয়া গ্রামে কুমিল্লায় কুরআনের অবমাননার কথিত অভিযোগে পূজামণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর চালিয়েছে স্থানীয় মাদ্রাসার ছাত্ররা। এতে মাদ্রাসা ছাত্রদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে পূজারীদের। সংঘর্ষে নবীগঞ্জ থানার ওসিসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুজনকে সিলেট প্রেরণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬ টার দিকে এই ঘটনাটি ঘটেছে।

আহতরা হলেন- নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ডালিম আহমেদ (৪২), বদরুল হোসেন (১৬), সাজনা বেগম (৩০), সতিশ দাশ (৬২), অপু দাশ (৩৫), প্রিয়াংকা দাশ (২২), কুটন দাশ (৩৫), সুপ্রদীপ দাশ (২৫), সৈতেন্দ দাশ (৬৫), ইব্রাহিম মিয়া (৩০), বনজিত দাশ (৫৫), পুরভী দাশ (৫২), বিউটি দাশ (২০), রূপু দাশ (৩৫), গুরুধন দাশ (৬০), আশীষ দাশ (৩০)। তাৎক্ষণিক অন্যদের নাম জানা যায়নি।

এরমধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় পুরভী দাশ (৫২), বিউটি দাশ (২০) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। নবীগঞ্জ হাসপাতালে রূপু দাশ (৩৫), গুরুধন দাশ (৬০), আশীষ দাশকে (৩০) ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের গুমগুমিয়া গ্রামের পাঞ্জারাই জিকে ওয়াই দাখিল মাদ্রাসার ছাত্ররা স্থানীয় যুবকদের নিয়ে মিছিল করে গুমগুমিয়া গ্রামের দুর্গা মন্দিরে ঢুকতে চাইলে হিন্দু ধর্মাবলম্বী পূজারীবৃন্দ বাধা দেন। এতে তাদের সাথে মাদ্রাসা ছাত্রদের বাকবিতন্ডায় হয়। এক পর্যায়ে দুর্গাপূজার মণ্ডপের সামনের লাইটিং ও অন্যান্য সামগ্রী ভাঙচুর করে পূজারীদের ওপর হামলা করা হয়। এরপর মিছিলকারীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় মিছিল থেকে ইটপাটকেলও নিক্ষেপ করা হয় পূজামণ্ডপের দিকে।

খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করলে নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. ডালিম আহমদ মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে তাকে নবীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনার পর হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ মিলাদ, সিলেটের ডিআইজি মো. মফিজ উদ্দিন, হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী, হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর চৌধুরী, নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম, নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন, এএসপি (নবীগঞ্জ সার্কেল) আবুল খায়ের ঘটনাস্থলে পৌঁছে উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে করেন। এঘটনার পর র‍্যাব-পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক দল গুমগুমিয়া গ্রামে মোতায়েন করা হয়েছে।

নবীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। যারা হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে তদন্তপূর্বক তাদের বিরুদ্ধ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পূজামণ্ডপে হামলার সাথে কে বা কারা জড়িত তদন্তপূর্বক বের করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত