নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ অক্টোবর, ২০২১ ১৪:১৬

সিলেটে উদ্ধারের পর ৩৮ বক অবমুক্ত, বিক্রেতা জেলহাজতে

সিলেট নগরের মদিনা মার্কেট এলাকায় সাদাবক বিক্রির সময় ইয়াহইয়া আহমদ (৩৫) নামে এক বিক্রেতাকে আটক করা হয়েছে। ইয়াহইয়া নবীগঞ্জের উত্তর দেবপাড়া গ্রামের আবু সুফিয়ান। তিনি বর্তমানে আখালিয়া নয়াবাজারে ভাড়া থাকেন।

বুধবার (১৩ অক্টোবর) দিনগত রাত ১০টার দিকে চারটি সাদাবক বিক্রির সময় তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে একই এলাকার খানবাজার পাখিকুঞ্জ নামের একটি আড়ত থেকে আরও ৩৪টি বক উদ্ধার করা হয়।

এঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে আটক পাখি বিক্রেতা ইয়াহইয়ার বিরুদ্ধে সিলেট বনবিভাগ মামলা দায়ের করে জব্দকৃত পাখিসহ তাকে বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এসময় আদালত ইয়াহইয়াকে জেলহাজতে পাঠানোর এবং জব্দকৃত পাখিগুলো অবমুক্ত করার আদেশ দেন। পরে নগরের শেখঘাট এলাকায় বনবিভাগের নার্সারিতে বকগুলোকে অবমুক্ত করেন সিলেট বনবিভাগের টাউন রেঞ্জের রেঞ্জার শহিদুল্লাহসহ কর্মকর্তারা। এসময় গণমাধ্যম ও পবেশকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বুধবার রাতে বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের প্রধান (সিএফ) মোল্লা রেজাউল করিম এবং বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ মৌলভীবাজারের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন। এসময় তাদের সহায়তা করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছামির মাহমুদ।

জানা গেছে, নগরের মদিনা মার্কেট এলাকার খানবাজার পাখিকুঞ্জ নামের দোকানের মালিক মায়িন আহমদ মাহি ও হারুনুর রশিদ আড়ত তৈরি করে খাচার ভেতর ১৯টি কানিবক ও ১৫টি সাদাবক রেখেছেন। বিক্রির উদ্দেশে রাখা বকগুলো উদ্ধার করা হলেও দোকান মালিক অভিযানের খবর পেয়ে পালিয়ে যান।

বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, একসময় দিনে বিক্রি হতো এসব পাখি। কিন্তু অভিযানের কারণে এখন রাতে বিক্রি হয়। এখানে পাখি বিক্রির একটি চক্র গড়ে উঠেছে। কিছুদিন আগেও একজন বিক্রেতার কাছ থেকে পাখি উদ্ধার করে অবমুক্ত করা হয়েছে। কেবল বিক্রেতা নয়, ক্রেতাদেরও আইনের আওতায় আনার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের প্রধান মোল্লা রেজাউল করিম বলেন, বক কৃষকের বন্ধু। এরা প্রচুর পরিমাণে পোকামাকড় খায়। যার কারণে পোকামাকড়ের হাত থেকে ফসল রক্ষা পায় এবং উৎপাদন ভালো হয়।

তিনি বলেন, বক যখন ধানক্ষেতে হাঁটে তখন মাটি নরম হয়। এতে ধানের গোড়ায় বাতাস প্রবাহিত হয়। কিন্তু মানুষ উপকারী এই পাখিগুলো শিকার করে খেয়ে ফেলছে। এতে পরিবেশের যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমনি ধানের উৎপাদনও ব্যহত হচ্ছে।

বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ মৌলভীবাজারের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, পাখি শিকার বন্ধে এরকম অভিযান অব্যাহত থাকবে। যারাই পাখি শিকার ও বিক্রি করবেন তাদের আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে এ ধরনের কর্মকাণ্ড করতে দেওয়া হবে না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত