জুড়ী প্রতিনিধি:

২৪ মে, ২০২২ ২১:২৮

জুড়ীতে হিজড়াদের লাগামহীন চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ মানুষ

মৌলভীবাজারের জুড়ীতে হিজড়াদের লাগামহীন চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ মানুষ। দোকানে দোকানে চাঁদাবাজিতে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন ভিন্ন পন্থায় চাঁদাবাজি করছে হিজড়া সম্প্রদায়ের লোকেরা। সাধারণ মানুষের পাশপাশি তাদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ বরযাত্রীরাও। বিশেষ করে বিয়ের দিন দুই-তিন ভাগে চাঁদা দিতে হয় হিজড়াদেরকে। না হলে গাড়ি চালানোর কোনো সুযোগ নেই। হিজড়াদের বিড়ম্বনার শিকার মানুষজন এর থেকে প্রতিকার চান।

সরেজমিনে দেখা যায়, গোয়ালবাড়ি এলাকার এক বর কন্যার পিত্রালয় কুলাউড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে জুড়ী নাইট চৌমুহনীতে তিনজন হিজড়া তাদের গাড়ি আটকিয়ে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদার টাকার পরিমাণ নিয়ে বাকবিতন্ডা শুরু হলে রাস্তার মধ্যে শুয়ে পড়ে এবং অশালীন আচরণ শুরু করে হিজড়ারা। চাঁদা দিতে দেরি করায় তাদের খারাপ আচরণ সমাজের কাছে খুব খারাপ মনে হয়। বিশেষ করে বরের পাশে থাকা নারী, পুরুষেরা লজ্জায় তাদের চাহিদামত টাকা দিয়ে দেন। শুধু তাই নয় হিজড়াদের দাবিকৃত টাকা না দিলে গাড়ি আটকিয়ে দেন তারা। কমপক্ষে দুই থেকে তিন হাজার টাকা দিতে হয় তাদের। কখনও কখনও ১০ থেকে ২০ টাকাও দাবি করে বসে।

নাম প্রকাশ্যে অন্য বরযাত্রীর এক সঙ্গী বলেন, হিজড়াদের ভয়ে ভোগতেরা ফাঁড়ি রাস্তা দিয়ে কুলাউড়া যাওয়ার চেষ্টা করলে তারা (হিজড়াদের দল) খবর পেয়ে মানিকসিংহ এসে আগে থেকে দাঁড়িয়ে থাকে। পরে প্রায় ৩০-৪০ মিনিট তাদের সাথে দাম দর কষিয়ে ১৫০০ টাকা দিয়ে রক্ষা পাই। লোকলজ্জার ভয়ে তর্ক না করে চাঁদা দিয়ে দেন অনেক ভদ্র পরিবারের লোকেরা।

জানা যায়, কিছুদিন পূর্বে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র দুইজন হিজড়াদেরকে তার সিটিতে চাকরি দেন। এদের মধ্যে এক জনের বাড়ি জুড়ী। তার নাম অনামিকা। ১০-১৫ দিন ঢাকায় থেকে সে আবার হিজড়া দলে চলে এসেছে।

আলাপকালে তার সাথের লোকজন (হিজড়া) বলে, ১৬-১৮ হাজার টাকা বেতনের চাকরি দিয়ে কি হবে। মাসে এর চেয়ে অনেক বেশি টাকা ইনকাম করি আমরা।

গত ১২ এপ্রিল রেলকলোনীতে হিজড়াদের বর্তমান বাসস্তানের পাশে বসবাসকারী পারভীন বেগম নামের এক নারীকে হেনস্তা করে ৩ হিজড়া। ভূক্তভোগী নারী থানায় অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার না পাওয়ায় বিচারের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্যের ধারে ধারে ঘুরছেন। তাদের কাছে বিচার না পেয়ে মঙ্গলবার মৌলভীবাজার আদালতে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভুক্তভোগী নারীর পরিবার।

আব্দুল আহাদ তারা নামের এক অভিভাবক বলেন,আমার এলাকার এক ছোট ভাইয়ের বিয়ের দিন তারা আমাদের গাড়ি আটকিয়ে দেয়,টাকা দিতে দেরি হওয়ার কারনে যে ভাষা তারা ব্যবহার করেছে,কোন সভ্য মানুষ কোনদিন এসব শুনেওনি।প্রশাসনের উচিত এদেরকে দমন করে জুড়ীবাসিকে রক্ষা করা।

জুড়ী থানার ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, কেউ অভিযোগ দেয় নি। অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত