ছাতক প্রতিনিধি

২৩ জুন, ২০২২ ২০:২৬

এখনও বিচ্ছিন্ন ছাতক, প্রাণহানি ৭

ছাতকে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। শহর এলাকাসহ গ্রামাঞ্চলের উঁচু এলাকার ঘর-বাড়ি থেকে বন্যার পানি নামলেও আশ্রয় কেন্দ্রে এখনও রয়েছেন হাজার-হাজার মানুষ। উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ঘর বাড়িতে বন্যার পানি নামছে না। সারা দেশের সাথে এখনো ছাতকের সড়ক যোগাযোগ রয়েছে বিচ্ছিন্ন।

শুক্রবার থেকে ছাতক-সিলেট সড়কে যান চলাচল শুরু হবে বলে জানিয়েছেন ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান।

ছাতকে এখনও লাখো মানুষ পানিবন্দি ও কর্মহীন। ভয়াবহ বন্যায় এখানে বিধ্বস্ত হয়েছে কয়েক হাজার কাচা ঘরবাড়ি। ঘর হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়েছেন অনেক মানুষ। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে হাজার-হাজার গবাদিপশু। ত্রাণ বিতরণ এবং মানুষের পুনর্বাসনে উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে কাজ করে যাচ্ছে সেনাবাহিনীর একটি দল।

বন্যায় ছাতকে প্রাণহানি ঘটেছে ৭ জনের। বৃহস্পতিবার জাউয়াবাজারে নিখোঁজ এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পানিতে ভেসে যাওয়া তমাল আহমদ (২০), পীযুষ দে (৪৮), খালেদ আহমদ (৩০), অশোক দাস (১৮), হাফিজ আলী (৩২) ও মখলিছুর রহমানের (৪৫) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবার, পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া আব্দুল লতিফ, আছাদ আহমেদ, সাগর সরকার, মুহিবুর রহমানসহ পুরুষ-মহিলা অনেক লোকজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে বন্যার পানি কমতে শুরু হলেও বাড়ছে জনদুর্ভোগ। নানা ধরনের রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে এখানে।

উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ চরম দুর্ভোগে ও খাদ্য সংকটে ভুগছেন। অসহায় মানুষের মাঝে সরকারি ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি বেসরকারি ভাবে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, রাজনৈতিক সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
ছাতকে সরকারি ত্রাণ অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় নৌকা ও সড়ক যোগাযোগ না থাকায় ত্রাণ পৌঁছাতে পারছে না বিভিন্ন দাতা সংস্থা। ভয়াবহ বন্যায় এ অঞ্চলে মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। বন্যায় প্লাবিত হয়েছিলো পৌরসভাসহ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন। খাদ্যের জন্য এখন মানুষ হাহাকার করছে।

বন্যার প্রথম থেকেই ছাতক ছিলো অন্ধকারে। ৭ দিন পর শহরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হলেও গ্রামাঞ্চলে এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়নি। এর মধ্যে গ্রামের লোকেরা ডাকাত আতংকে রাত পার করছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান জানান, উপজেলার সকল এলাকায় রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। উপজেলার ১৩ ইউনিয়নে ৬০ মে. টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত