সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

৩১ মার্চ, ২০২৩ ১৩:১৫

হাওরে এবার বোরোর বাম্পার ফলনের আশা

হাওরে হাসছে কৃষকের সোনালী ধান। কৃষকের মুখেও হাসি। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবার বোরোর বাম্পার ফলনের আশা কৃষকদের।

বৈশাখ মাসে হাওরের আবহাওয়ার পূর্বাভাসও ইতিবাচক। সাম্প্রতিক বৃষ্টি বোরো চাষিদের জন্য ছিল আশীর্বাদস্বরূপ। ক্ষেতে ফলনও ভালো হয়েছে। সব মিলিয়ে হাওরের কৃষকরা বোরোর বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন। হাওরের কৃষক, আবহাওয়াবিদসহ সংশ্লিষ্ট সবাইর সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।

ভাটির জেলা হিসেবে পরিচিত সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলার ১৪২ হাওরের  বোরো ধানের শিষে এখন ফুল বেরিয়েছে। কোনো কোনো ধানের শিষে ধান বোরোনো শুরু হয়েছে। মার্চের শুরুতে বা চৈত্রের মাঝামাঝি সময়ে বৃষ্টি হওয়ায় ধানের গোছা বলবান হয়েছে। এ জন্য শিষভর্তি এবার ধানের ফুলে।

দিরাই উপজেলার রাজাপুর গ্রামের বড় কৃষক আব্দুস ছাত্তার বলেন, সঠিক সময়ে বৃষ্টি হওয়ায় এবার ধানের গোছা শক্তিশালী বা বলবান হয়েছে। গোছায় গোছায় ফুলে ভরে গেছে। বুধবার সকালে ক্ষেতে গিয়ে তাঁর মন জুড়িয়ে গেছে। চৈত্রের বাকি ১৫ দিন এবং বৈশাখের ১৫ দিন আবহাওয়া অনকূলে থাকলে, ফলন নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা নেই। হাসিভরা মুখে তিনি বললেন, ফলন দেখে তাঁর মনটা এবার ভালো, বাকিটা আল্লাহ ভরসা।

বিশ্বম্ভরপুরের রাধানগরের বড় কৃষক আব্দুল হেকিম বলেন, গত কয়েক দিন হয় বৃষ্টি হচ্ছে। মৌসুমে আগেভাগে বৃষ্টি হওয়ায় আকাশ হালকা হচ্ছে। ফসল কাটার সময় আকাশ ভালো থাকতে পারে। অতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ায় ধানের কিছু ফুল ঝরেছে। এর পরও ফলন এবার ভালো হবে বলে তিনি আশাবাদী।

শাল্লার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছত্তার মিয়া জানান, সময় মতো বৃষ্টি হওয়ায় দুশ্চিন্তা দূর হয়েছে। এখন আকাশ মেঘলা থাকায়, ধান কাটার সময় (বৈশাখ মাসে) খরা থাকবে। তাতে ধান গোলায় তুলতে সুবিধা হবে।

জামালগঞ্জের হালির হাওরের বদরপুর গ্রামের কৃষক খোকন মিয়া বললেন, ধানের ফুল থেকে সবুজ ধান বের হওয়া শুরু হয়েছে। এই সময়ের বৃষ্টি, শিষে ধানের দানা বাঁধতে সহায়ক হবে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ সজীব হোসাইন জানান, আগামী কয়েক দিন আবহাওয়া একই রকমের থাকবে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের জলবায়ু মহাশাখার বিভাগীয় প্রধান আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, সুনামগঞ্জে বৈশাখের ধান এবার নির্বিঘ্নে কাটা যেতে পারে। এপ্রিল মাসে ভারী বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা আপাতত নেই।

তবে ধান ঘরে তোলা নিয়ে আশঙ্কার কথা জানান বিশ্বম্ভরপুরের কৃষক স্বপন কুমার বর্মণ। তিনি বলেন, গত কয়েক দিন যেভাবে বৃষ্টি হয়েছে। এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে হাওরের নিচু অংশের ধান জলাবদ্ধতায় নষ্ট হওয়ার শঙ্কা আছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত