রেজুওয়ান কোরেশী, জগন্নাথপুর

১৬ এপ্রিল, ২০২৪ ২৩:৩৩

নদী নয়, যেনো আবর্জনার ভাগাড়

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বাজারে ময়লা ফেলার কোনো নির্দিষ্ট জায়গা নেই। ফলে বাজারের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া নলজুর নদীতে অবাধে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এতে করে একাংশ ভরাট হয়ে নদীটি মরে যাচ্ছে, দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।

এছাড়াও, নদীর ২ পাশে অবৈধ স্থাপনাও গড়ে উঠেছে।

সবমিলিয়ে নদীটি দিন দিন সংকীর্ণ হয়ে খালে পরিণত হয়েছে। বর্ষায় নদীর ঢাল ময়লা-পলিথিনে ছেয়ে যায়। জীববৈচিত্র্য হুমকিতে পড়ে। দূষণে শুষ্ক মৌসুমে নদীটি মৃতপ্রায়।

রবিবার (১৪ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা গেছে, নলজুর নদীর অবস্থান জগন্নাথপুর বাজারের মাঝখানে। বাজারে মাংস, মাছ, কাঁচা তরকারিসহ নানান পণ্যের দোকান আছে। ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে এলাকাবাসী প্রকাশ্যে নদীতে ময়লা ফেলছেন। ময়লার স্তূপ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। ডাম্পিং স্টেশনের অভাবে সবাই নদীতে ময়লা ফেলছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুর রহমান মিনহাজ বলেন, 'জবাই করা পশুর বর্জ্য, ময়লা-আবর্জনা, পচা মাছ ইত্যাদি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এসব ময়লা-আবর্জনা থেকে তীব্র গন্ধ বের হচ্ছে। প্রশাসন ব্যবস্থা নিলে নদী বাঁচত, আমরাও বাঁচতাম।'

নলজুর নদীর শহীদ মিনারের পাশেই বাড়ি সংবাদকর্মী সাংবাদিক আমিনুল হক সিপনের।  তিনি বলেন, নলজুর নদী সিলেটের কুশিয়ারা নদী থেকে উৎপন্ন হয়ে কুশিয়ারা নদীতে মিলেছে। একসময় নদীটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যাত্রী পারাপারের পাশাপাশি পণ্য পরিবহন করা হতো। একসময় এটি কৃষি, বাণিজ্য ও যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখত। বর্তমানে দখল, দূষণ ও ভরাটের কারণে নদীর অস্তিত্ব বিপন্ন।'

জগন্নাথপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মুজিবুর রহমান বলেন, বাজারের ময়লা-আবর্জনা নিষিদ্ধ পলিথিনে ভরে নদীতে ময়লা ফেলা হচ্ছে। দূষণের পাশাপাশি দুর্গন্ধে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, 'বর্ষায় এসব ময়লা অন্যান্য নদীর মাধ্যমে মেঘনায় পড়ে।'দূষণের কারণে নাব্যতা হারিয়ে নদীটি এখন স্থানীয়দের কাছে খাল হিসেবে পরিচিত।'

জগন্নাথপুর উপজেলা সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মধুসুধন ধর বলেন, নলজুর নদীর ঐতিহ্য এখন আর নেই। একসময় এ নদী দিয়ে নৌকা চলাচল করতো। সেই নদী এখন খালে পরিণত হয়েছে। বর্ষাকালে এ নদীর পানি উপচে ফসল নষ্ট হয়। এ অঞ্চলের কৃষি ও কৃষককে বাঁচাতে নলজুর নদী খনন অত্যন্ত জরুরি। নদী পরিষ্কার না করলে কোনো লাভ হবে না। এর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভার মেয়র আক্তার হোসেন বলেন, গুরুত্ব বিবেচনায় সব কাজ করার চেষ্টা করছি, পৌরসভা হোক সেই স্বপ্নের মহানগরী। সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় সবাইকে আন্তরিক সহযোগিতা চাচ্ছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত