চুনারুঘাট প্রতিনিধি

২১ জানুয়ারি, ২০২৫ ২১:৩২

চিকিৎসকশূন্য হাসপাতাল

চুনারুঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা ব্যাহত

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোন চিকিৎসক নেই। তারপরও  তিনজন চিকিৎসক প্রেষণে অন্যত্র থাকায় স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার মানুষ।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষের জন্য চিকিৎসা  সেবার এক মাত্র ভরসা ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালটিতে ২০ জন চিকিৎসক থাকার কথা। কিন্তু এ হাসপাতালে কোন চিকিৎসক নেই। উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ৩ জন চিকিৎসক এনে বহির্বিভাগের চিকিৎসা সেবা চালু রাখা হয়েছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক প্রশাসনিক কাজে  ব্যস্ত থাকায়, তাদের পক্ষেও সবসময় রোগী দেখা সম্ভব হয় না। তবে রোগীর ভিড় সামাল দিতে কাজের ফাঁকে ফাঁকে অফিসের নিজ কক্ষে রোগী দেখেন ইউএইচএন্ডএফপিও। হাসপাতালে জেনারেটর থাকলেও তেল বরাদ্ধ না  থাকায় জেনারেটর চালু করা সম্ভব হয়  না। যার ফলে বিদুৎ চলে গেলে অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে পুরো হাসপাতাল।

এদিকে, হাসপাতালে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ৩ জন, এসিস্ট্যান্ট সার্জন ৪ জন, নার্স ৯ জন, সিনিয়র স্টাফ নার্স ৭ জন, হেলথ এসিস্ট্যান্ট ২৩ জন, আয়া ১ জন, অফিস সহায়ক ৪ জন, বাবুর্চি ২ জনের পদ দীর্ঘ দিন ধরে শূন্য।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক র্নিজর ভট্রাচার্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের চিকিৎসক রহুল আমীন ঢাকা ডেন্টার কলেজ হাসপাতালে ও ডা. কামরুজ্জামান পাশ্ববর্তী নবীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রেষণে কর্মরত রয়েছেন। অপর দিকে ডাঃ অনিক সাহা কতৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই হাসপাতালে অনুপস্থিত আছেন।

হাসপাতালে গাইনি ও সার্জারি কনসালট্যান্ট, অ্যানেস্থেশিয়া চিকিৎসক র্দীঘদিন ধরে না থাকায় অপারেশন থিয়েটার (ওটি) চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না করার ফলে ওটির যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যার কর্মকর্তা ডা. ফাতেমা হক বলেন, ৫০ শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন গড়ে রোগী ভর্তি হয় ৬০ থেকে ৭০ জন। আবার বহির্বিভাগেও প্রতিদিন গড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ রোগী  উপস্থিত থাকেন। ফলে চিকিৎসক সংকট থাকায় দূর - দূরান্ত থেকে আসা সাধারণ রোগীদের কাক্সিক্ষত সেবা দিতে আমাদের হিমসিম খেতে হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরাও সমস্যায় আছি। প্রেষণ বাতিলের জন্য একাধিকবার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। তা ছাড়া শূন্য পদপুরণের জন্যও স্বস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত